ফাইল চিত্র।
হাসপাতালে শয্যা পেতে কোভিড আক্রান্তদের হয়রানির অভিজ্ঞতা অজানা নয়। কিন্তু সরকারি কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসকই আক্রান্ত হওয়ার পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শয্যা না পাওয়ার অভিযোগ উঠল। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজেই সে কথা জানালেন আক্রান্ত চিকিৎসক। যার পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকেরাই যদি শয্যা না পান তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে, সেই প্রশ্ন উঠে গেল।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে অবস্থিত ‘রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি’র ওই পিজিটি চিকিৎসকের বৃহস্পতিবার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। পিজিটি তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, মাস দুয়েক আগে তিনি মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ব্লকে(এসএসবি) কর্মরত ছিলেন। সেই সুবাদে এসএসবি’র দশ তলায় চিকিৎসকদের জন্য একটি কেবিন রাখা রয়েছে তা তিনি জানতেন। সেখানে ভর্তি হওয়ার জন্য ডেপুটি সুপার জয়ন্ত সান্যাল-সহ আরও দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে তিনি ফোন করেন। আক্রান্তকে জানানো হয়, কেবিন হবে না। পরিবর্তে হাসপাতালের অন্য একটি শয্যায় তাঁকে ভর্তি নেওয়া হবে। কিন্তু তার জন্য আক্রান্ত চিকিৎসককেই ডেপুটি সুপার স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি আনতে বলেন বলে অভিযোগ! অনুমতি আদায়ে আক্রান্তকে স্বাস্থ্য ভবনের দু’টি ল্যান্ডলাইন নম্বর দেওয়া হয়। পিজিটি চিকিৎসকের দাবি, ঘণ্টাদুয়েক চেষ্টা পরও ল্যান্ডলাইন নম্বরে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে নদিয়া জেলায় বন্ধু চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আক্রান্ত পিজিটি। আইআইও’য়ে যোগ দেওয়ার আগে নদিয়ায় পোস্টিং ছিল আক্রান্ত পিজিটি’র। শেষ পর্যন্ত পুরনো কর্মস্থলের বন্ধু চিকিৎসকদের সাহায্যে শনিবার ওই জেলার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন
তিনি। মেডিক্যাল কলেজ থেকে জেলার কোভিড হাসপাতালে আক্রান্তকে আনার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স নদিয়া থেকেই পাঠানো হয়েছিল বলে খবর।
পুরো ঘটনায় জুনিয়র চিকিৎসকেরা তো বটেই সিনিয়র চিকিৎসকদেরও একাংশ ‘স্তম্ভিত’। সোমবার এ বিষয়ে উপাধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাসকে একটি স্মারকলিপি জমা দেন পিজিটিদের একাংশ। রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালোমলজির অধিকর্তা অসীম ঘোষ জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে জন্য স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। উপাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘কোথাও একটা বোঝাপড়ার অভাব ঘটেছে। যাঁরা প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন তাঁদের জন্য তো ব্যবস্থা করতেই হবে।’’