রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ফাইল চিত্র।
পুরোদস্তুর সচিবালয় রয়েছে রাজভবনে। তার পরেও রাজ্যপালের কার্যালয়কে ‘গতিশীল’ করতে ১১ জন কর্মী ও অফিসার নিয়োগ করতে চান জগদীপ ধনখড়। তবে ওই সব পদে সরকারি অফিসারদের নিতে চান না রাজ্যপাল। বাছাই পর্ব কী ভাবে হবে, তা ঠিক করতে চান নিজে।
রাজভবনের প্রস্তাব নিয়ে নবান্ন এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলতে নারাজ। তবে প্রশাসনের অন্দরে আলোচনা, রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের সময়ে এত লোকের বেতন দেওয়া কঠিন হতে পারে। তাই প্রস্তাবে সায় দেওয়ার আগে আরও ভাবনাচিন্তা করা দরকার। নবান্নের খবর, রাজভবনের সচিবালয় থেকে স্বরাষ্ট্র দফতরে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল তাঁর সচিবালয়ে ‘কনফিডেনশিয়াল সেকশন’ চালু করতে চান। সে জন্য ১১ জন অফিসার ও কর্মী প্রয়োজন। তাঁদের মধ্যে চার জন গ্রুপ এ অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওএসডি) হিসেবে নিযুক্ত হবেন। এ ছাড়া, প্রেস উপদেষ্টা, বিশেষ সহায়ক, আপ্ত সহায়ক-সহ আরও নানা পদে লোক চান ধনখড়। তিনি যত দিন রাজ্যপাল থাকবেন, এই কর্মীরাও তত দিন কর্মরত থাকবেন। এখন তাঁর এক জন ‘কনফিডেনশিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যপাল চাইলে স্বাধীন ভাবে নিজের ‘স্টাফ’ নিয়োগ করতেই পারেন। পূর্বতন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ছ’জন ‘পার্সোনাল স্টাফ’ নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। নবান্ন তা অনুমোদন করেছিল। গোপালকৃষ্ণ গাঁধী নিজে ইন্টারভিউ নিয়ে সরকারি অফিসারদের প্যানেল থেকে তাঁর সচিবালয়ের অফিসার বেছে নিতেন। এম কে নারায়ণনও নিজস্ব সহকারী নিয়োগ করেছিলেন, তবে তার বেতন রাজ্যকে দিতে হয়নি।
তবে ‘কনফিডেনশিয়াল সেকশন’ তৈরি করে গ্রুপ-এ অফিসার এবং প্রেস উপদেষ্টা নিয়োগ করতে চেয়ে এমন প্রস্তাব রাজভবন থেকে অতীতে আসেনি বলে নবান্ন সূত্রের বক্তব্য। একসঙ্গে ১১ জনকে বাইরে থেকে নিয়োগের প্রস্তাবও আসেনি। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘রাজভবন কি রাজ্যের অফিসারদের উপরে ভরসা করছেন না? ওএসডি হিসেবে বাইরের লোক নিতে হচ্ছে কেন?’’
রাজভবন সচিবালয়ের দাবি, রাজ্যপালের নির্দিষ্ট ক্ষমতার মধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যপাল নিজের ওএসডি নিয়োগ করেন। এর সঙ্গে অবিশ্বাসের কোনও সম্পর্ক নেই। রাজভবনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া ছাড়া স্বরাষ্ট্র দফতরের আর কোনও ভূমিকা নেই। বাড়তি খরচের যুক্তিও ধোপে টেকে না। কারণ, রাজভবন পরিচালনার বাজেট বরাদ্দ থেকেই এঁদের বেতন দেওয়া হবে। বাড়তি টাকা মঞ্জুর করতে হবে না।’’