Jagdeep Dhankha

মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত, গড়িয়া শ্মশানকাণ্ড নিয়ে ফের সরব রাজ্যপাল

স্বরাষ্ট্রসচিব ও কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যাও চেয়েছেন রাজ্যপাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ১৮:০৮
Share:

গড়িয়া শ্মশানকাণ্ড নিয়ে ফের টুইট রাজ্যপালের।

গড়িয়া শ্মশানকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েও থামলেন না রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ওই ঘটনাকে সামনে রেখেই রবিবার আবার টুইট করলেন তিনি। গড়িয়ার শ্মশানে মৃতদেহ আঁকশি দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার যে বীভৎস দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। সেইসঙ্গে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ও কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যাও চেয়েছেন তিনি।

Advertisement

গড়িয়া শ্মশানে মৃতদেহ আঁকশি দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রোজই টুইটারে সরব হচ্ছেন রাজ্যপাল। এ দিনও ফের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ধারাবাহিক টুইটের প্রথমটিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘আঁকশি দিয়ে টেনে হিঁচড়ে মানুষের দেহ নিয়ে যাওয়ার ভয়াবহ, অকল্পনীয় দৃশ্য বহুদিন অমলিন থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এই বর্বরতার কলঙ্ক মোছা মুশকিল। মৃতদেহ সৎকার একটি পবিত্র কর্ম।’’

গড়িয়া শ্মশানের ওই দেহগুলি করোনা আক্রান্তদের নয় বলে শনিবার জানিয়েছিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। এ নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ প্রচার চলছে বলেও দাবি করা হয়েছিল। এ দিন রাজ্যপাল তাঁর দ্বিতীয় টুইটে লেখেন, ‘‘সেই ভিডিয়োগুলি নকল বলা ক্ষমাহীন ভুল। ওই দেহগুলির প্রতি নির্লজ্জ অসম্মান।’’ এ দিন তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলার আগে ভাবুন, যদি ওই ১৪ জনের কেউ এক জন আপনার নিকট কেউ হতেন?’’

Advertisement

আরও পড়ুন: সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, আত্মহত্যা বলে সন্দেহ​

গড়িয়া শ্মশানকাণ্ড নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ও ফিরহাদ হাকিমের ব্যাখ্যাও চেয়েছেন জগদীপ ধনখড়। তৃতীয় টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘রাজ্যের স্বারাষ্ট্রসচিব এবং কলকাতা পুরসভার কাছে যা জানতে চেয়েছি, আশাকরি দ্রুত তা জানানো হবে। আশা করি, পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম পরিস্থিতি জানিয়ে যাবেন। সংবেদনশীল এবং আবেগপূর্ণ এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার মূল্য 'এমএপি'ত্রয়ীকে দিতে হবে।’’

গড়িয়া শ্মশানের ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর তা থেকেই রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে নতুন করে সঙ্ঘাতের সূত্রপাত। ওই ভাবে দেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে বর্বরোচিত আখ্যা দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলে টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
বিষয়টি নিয়ে শনিবার তৃণমূলের তরফে সম্মিলিত আক্রমণ করা হয়। প্রথমে টুইটারে তাঁকে আক্রমণ শানান সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তার পর সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজ্যপালের তীব্র সমালোচনা করেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন।

আরও পড়ুন: শনিবার দেশে নতুন সংক্রমণ প্রায় ১২ হাজার, মোট মৃত্যু ৯ হাজার ছাড়াল​

ধনখড়ের উদ্দেশে মহুয়া টুইট করেন, ‘‘আঙ্কলজি, তিনটি বিষয়— এক: বিজেপি নেতা নির্বাচন করে, কার হাতে কতটা রক্তের দাগ আছে দেখে। তৃণমূল কঠোর পরিশ্রমকে পুরস্কৃত করে। দুই: আইনজীবী হিসেবে আপনার কেরিয়ার বিশেষ উজ্জ্বল নয়। যত দিন রাজ্যপাল রয়েছেন, রাজভবনের গরিমাটুকু অন্তত বজায় রাখার চেষ্টা করুন। তিন: পরবর্তী ভোটে আপনি রাজস্থান থেকে লড়তেই পারেন। নিজেকে তার জন্য ফিট রাখুন।’’ রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ করে ডেরেক বলেন, ‘‘রাজভবনে যিনি থাকছেন, তিনি বিজেপি এক জন মুখপাত্র।’’

তৃণমূল‌ের সর্বাত্মক আক্রমণের পরেও অবশ্য রাজ্যপাল থামেননি। শনিবারের টুইট যুদ্ধের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের লম্বা টুইট করেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আশা করেন ফিরহাদ হাকিম তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে যাবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement