ক্ষুব্ধ: ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে ভর্ৎসনা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের গাঁধীঘাটে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কেন এই ধমক, পরে তার ব্যাখ্যা দিয়ে মেয়ো রোডে গাঁধীমূর্তির নীচে অনুষ্ঠানের পরে রাজ্যপাল বলেন, ব্যারাকপুরে অনুষ্ঠান চলাকালীন সামনের সারিতে বসে পুলিশ-কর্তারা খবরের কাগজ পড়ছিলেন।
তবে ঘটনা যা-ই ঘটে থাকুক, রাজ্যের এক জন আইপিএস অফিসারকে প্রকাশ্য রাস্তায় রাজ্যপাল ধমকাচ্ছেন, এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মত অভিজ্ঞদের। প্রবীণ পুলিশ-কর্তাদের মত, রাজ্যপাল যদি কোনও বিষয়ে বিরক্ত বা অপমানিত হয়ে থাকেন, তা হলে তিনি নিজের সচিবালয়ের মাধ্যমে তাঁর উষ্মা রাজ্যের পুলিশ প্রধানকে জানাতে পারতেন। প্রকাশ্যে এক আইপিএস অফিসারকে রাজ্যপালের ধমকানো শুধু অশোভনই নয়, তাঁর পদমর্যাদার পক্ষেও বেমানান। রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বলেছেন, ‘‘এ ভাবে তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের মনোবলে ধাক্কা দিতে চাইছেন। নিজের ও নিজের পদের অমর্যাদা করে চলেছেন।’’
ব্যারাকপুরে গাঁধীঘাটের অনুষ্ঠান শেষে বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল গাড়িতে ওঠার সময়ে প্রথামাফিক তাঁকে স্যালুট করেন মনোজ। আচমকা তাঁর দিকে ঘুরে মনোজকে ধমকাতে শুরু করেন ধনখড়। রাজ্যপাল মনোজকে বলেন, ‘‘এটা আমাদের লজ্জা! এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটল! ওই ব্যক্তিদের একটা তালিকা আমার কাছে পাঠাবেন। যদি তা নবান্নের মাধ্যমে পাঠাতে চান, তা-ও করতে পারেন।’’ এর পরেই রাজ্যাপাল বলেন, ‘‘আমি খুবই চিন্তিত। এটা চরম গাফিলতি।’’
এর পরেই রাজ্যপাল বলতে শুরু করেন, ‘‘একটা-দুটো-তিনটে, একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে এ রাজ্যে। আমি খুবই বিরক্ত। আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি, যেখানে আইনের শাসন নেই। উর্দিধারীরাই যদি এ রকম করে! আর আপনি নিজে সেখানে বসেছিলেন।’’
এই বিষয়ে মনোজের বক্তব্য, ‘‘আমি জানি না, কেন উনি এমন কথা বললেন।’’ তবে কোনও কোনও পুলিশ-কর্তা মনে করছেন, রাজ্যপালের বক্তৃতার সময়ে পুলিশকর্মীদের কেউ কেউ তাঁর দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দেননি। সেটাই হয়তো রাজ্যপালের উষ্মার কারণ।