West Bengall News

ডেউচা-পাঁচামিতে হস্তক্ষেপে প্রস্তুত, বার্তা রাজ্যপালের, আরও বাড়তে পারে সংঘাত

প্রায় একই বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আগেই চিঠি লিখেছিলেন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৪১
Share:

রাজভবনে জনজাতিদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। —নিজস্ব চিত্র

প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি গিয়েছিল। এ বার ডেপুটেশন জমা পড়ল রাজ্যপালের কাছে। ডেউচা-পাঁচামি নিয়ে সংঘাত আরও বাড়িয়ে তোলার তোড়জোড় শুরু করল বিজেপি। প্রয়োজন পড়লে তিনি নিজে ডেউচায় যাবেন পরিস্থিতি দেখে আসতে— জনজাতিদের একটি প্রতিনিধি দলকে সোমবার সে আশ্বাসও রাজ্যপাল দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

বিজেপির যুবনেতা শঙ্কুদেব পন্ডার উদ্যেগে এ দিন রাজভবনে যান জনজাতি সমাজের প্রতিনিধিরা। শুধু বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামির প্রতিনিধিরা নন, রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকেই জনজাতি নেতাদের শামিল করা হয়েছিল এই প্রতিনিধি দলে। এ রাজ্যে জনজাতি প্রধান এলাকাগুলিতে যখনই খনি বা অন্য কোনও প্রকল্প তৈরি হয়েছে, তখনই জনজাতি সমাজ সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে— রাজ্যপালকে এমনই জানায় প্রতিনিধিদলটি। ডেউচা-পাঁচামিতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। সেখানে কয়লা ব্লক প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে স্থানীয় জনজাতি অধিবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে হবে সরকারকে— এই দাবি তাঁরা রাজ্যপালের কাছে পেশ করেছেন।

প্রায় একই বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আগেই চিঠি লিখেছিলেন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। পুজোর আগে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা ব্লক প্রকল্পের উদ্বোধনে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধও করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরের দিনই স্বপন দাশগুপ্ত চিঠি লেখেন প্রধানমন্ত্রীকে। ডেউচা-পাঁচামি প্রকল্প এখনও অধিকাংশ ছাড়পত্রই পায়নি, চিঠিতে জানান তিনি। ওই প্রকল্পের জন্য যাঁদের উচ্ছেদ হতে হবে, তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নীতিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তৈরি করেনি, এ কথাও চিঠিতে লেখা হয়েছিল। তাই তড়িঘড়ি উদ্বোধনের চেষ্টা হলে প্রধানমন্ত্রী তাতে শামিল না হন— অনুরোধ করেন বিজেপি সাংসদ।

Advertisement

তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনজাতি সমাজের ক্ষোভকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে তারা তৎপর হয়েছে। এ দিন জনজাতি প্রতিনিধিদল নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পরে শঙ্কুদেব বলেন, ‘‘রাজ্যপাল সব সমস্যার কথা শুনেছেন। যদি তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়, তা হলে পরিস্থিতি দেখতে তিনি ডেউচা-পাঁচামিতে যেতে পারেন, রাজ্যপাল এ কথাও আমাদের বলেছেন।’’

আরও পড়ুন: বাংলা পক্ষে ভাঙন, হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির অভিযোগ এনে তৈরি হল পৃথক সংগঠন

আরও পডু়ন: সিএবি-এনআরসি একই মুদ্রার দু’পিঠ, এক জনকেও তাড়াতে দেব না: খড়্গপুরে হুঙ্কার মমতার

এতেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক শিবির। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা তথা প্রশাসনের সম্পর্ক কতটা ‘মধুর’, তা গত কয়েক মাসে গোটা বাংলা জেনে গিয়েছে। একের পর এক ইস্যুতে সংঘাত সামনে এসেছেন। যে ডেউচা-পাঁচামি নিয়ে রাজ্য সরকার এমনিতেই ব্যাকফুটে রয়েছে সেই ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করে রাজ্যপাল যদি পরিস্থিতি আরও অস্বস্তিকর করে তোলেন রাজ্য সরকারের জন্য, তা হলে সংঘাত আরও বাড়ার আশঙ্কা থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement