— ফাইল ছবি।
দার্জিলিঙের রাজভবনে গিয়ে তিন দিন থাকতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে এই আমন্ত্রণই জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার সকালে আচমকাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছন তিনি। তখন গিয়ে আরও এক বার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। সেই মতো দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তখনই তাঁদের সমস্যার কথা শোনার পাশাপাশি দার্জিলিঙের রাজভবনে তাঁদের থাকার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
অনিশা রায় নামে এক ছাত্রী রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা আমাদের সমস্যা তুলে ধরেছি। লাইব্রেরি নিয়ে সমস্যার কথা বলেছি। তিনি বলেছেন বিশ্ব লাইব্রেরির সঙ্গে যুক্ত করা হবে। মেয়েরা স্যানিটরি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন নিয়ে বলেছি। উনি বলেছেন, ব্যবস্থা নেবেন।’’ তার পরেই ওই ছাত্রী দার্জিলিঙে আমন্ত্রণের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিঙে রাজভবনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তিন দিনের জন্য। তবে কবে, সেটা উনি পরে জানাবেন।’’
ইংরেজি স্নাতকোত্তরের ছাত্র শৌভিক সিংহ জানিয়েছেন, রাজভবনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল। ওই ছাত্র বলেন, ‘‘সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা বিভাগের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিভিন্ন বিভাগের পিএজির বিজ্ঞপ্তি বার হয়নি। তিনি বলেছেন বিভাগীয় প্রধান বা উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করবেন।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফেস্ট’ হওয়ার বিষয়েও রাজ্যপাল আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই ছাত্র। শৌভিকের কথায়, ‘‘সাত বছর ফেস্ট হয়নি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যপাল ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। রাজভবনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, যেমন ১৫ অগস্ট, সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা যোগ দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।’’
ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁদের নিজের লেখা বইও তুলে দিয়েছেন বোস। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হওয়ার পর প্রথম ১০০ দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন তিনি। তাতে রয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার ছবি। ‘হান্ড্রেড ডেজ় অ্যান্ড বিয়ন্ড’ নামে সেই বই পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিয়েছেন রাজ্যপাল। অধ্যাপকদের হাতে তুলে দিয়েছেন নিজের লেখা ‘সাইলেন্স সাউন্ডস গুড’ নামে একটি বই।
সোমবার সকালে রাজ্যপাল যে আসবেন, সে খবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, এমনকি পুলিশের কাছেও ছিল না বলে জানা গিয়েছে। সকাল ১১টা নাগাদ আচমকাই কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে রাজ্যপালের কনভয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়, প্রাথমিক ভাবে তা জানা যায়নি। রাজভবনের তরফেও এই বিষয়ে মুখ খোলা হয়নি। তখনই তিনি দ্বিতীয় বার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই মতোই দুপুর গড়ানোর আগেই প্রস্তুতি শুরু করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় বার রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময় জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র সংগঠন ডিএসও। কিছু সময়ের জন্য আটকে যায় রাজ্যপালের গাড়ি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর ঢোকেন তিনি। সূত্রের খবর, কথা বলেন অধ্যাপক এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে। তখনই দার্জিলিঙের রাজভবনে তিন দিন কাটানোর আমন্ত্রণ জানান বোস।