গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মোটামুটি এক বছরের ব্যবধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আনন্দ বোসের মধ্যে মিষ্টি বিনিময় এক সূত্রে গাঁথা হয়ে রইল। বোস যে দিন শপথ নেন সে দিন মুখ্যমন্ত্রী যে দোকানের রসগোল্লা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন সেই মিষ্টি প্রস্তুতকারকদেরই সাত রকমের মিষ্টি মমতাকে দিলেন রাজ্যপাল।
মাঝে একটা বছর। নবান্ন বনাম রাজভবনের লড়াইয়ের শেষ নেই। সোমবার রাজভবনে যান মমতা। ঘণ্টাখানেকের বৈঠকে কী নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে আলোচনা তা অবশ্য কোনও পক্ষই জানাননি। তবে সোমবারের মমতা-বোস সাক্ষাৎ ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’ বলেই রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে সাম্প্রতিক উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বৈঠকের একটা অংশে কোনও আলোচনাই ছিল না। রাজ্যপাল এক থালা নানা স্বাদের মিষ্টি তুলে দেন মমতার হাতে। এক বছর আগে বোস শপথ নিয়েছিলেন ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর। তার আগেই নবান্ন থেকে নির্দেশ গিয়েছিল কলকাতায় রসগোল্লার আবিষ্কারক নবীনচন্দ্র দাসের এক বংশধরের সংস্থাকে। বলা হয়েছিল বড় বড় রসগোল্লা নীল হাঁড়িতে করে নবান্ন থেকে যাবে রাজভবনে। দু’টি নীল হাঁড়িতে পঞ্চাশটি করে মোট একশোটি সাদা রসগোল্লা নিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ বার সেই একই সংস্থার কাছে মিষ্টি সাজানোর বরাত দেয় রাজভবন। বলা হয়, একটি মাটির থালায় নানা স্বাদের মিষ্টি দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য। জানা গিয়েছে মোট সাত রকমের মিষ্টি দিয়ে সাজানো হয় থালা। তাতে নলেন গুড়ের সন্দেশ, নলেন গুড়ের ক্ষীরকদম, ছানার বাটার স্কচ সন্দেশ, ছানার টোস্ট এ সব তো ছিলই। সেই সঙ্গে ছিল এই সংস্থার বিখ্যাত ‘চম্পাকলি’ মিষ্টি। এই মিষ্টির দু’পাশে হলুদ রসাল অংশ আর মাঝে ছানা। অনেকটা স্যান্ডুইচের মতো। তারই মধ্যে থাকে একটি চেরি ফল। রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, বোস নিজে সেই মিষ্টির থালি তুলে দেন মমতার হাতে। সঙ্গে ফুল তো ছিলই। আর সেই সময়টায় দু’জনের মুখেই লেগে ছিল ‘তিক্ততা ভোলা’ হাসি।
কেরলের ভূমিপুত্র বোস কর্মজীবনের শুরুতে কলকাতায় বেশ কিছু দিন কাটিয়েছেন। সেই সময়ে ধর্মতলার এই দোকানের রসগোল্লা তিনি কয়েক টন খেয়েছেন বলে বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। সেটা জানার পরেই সম্ভবত রসগোল্লায় স্বাগত জানানোর কথা ঠিক করেন মমতা। এ বার মিষ্টির বিনিময়ে মিষ্টি শুভেচ্ছা জানাতে সেই যৌবনের পছন্দের দোকানকেই বাছলেন বোস।