আইনবলে রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ভিজ়িটর' হলেন রাজ্যপাল। ফাইল ছবি
তিনি রাজ্যপাল। তিনি ডেকেছেন। তবু রাজ্যের ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও উপাচার্যেরা সোমবার সেই বৈঠকে যাননি। তাতে বেজায় ক্ষিপ্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এতটাই যে, টুইট করে ওই আচার্যদের জানালেন, এই মনোভাব 'ইউনিয়নিজ়ম'-এর নামান্তর। সেই সঙ্গে আরও জানান, বৃহস্পতিবার তিনি আবার ওই বৈঠক ডেকেছেন।
আইনবলে রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ভিজ়িটর' হলেন রাজ্যপাল। শিক্ষা শিবির সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেক আগে রাজভবন থেকে ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়, রাজ্যপাল ওই সব প্রতিষ্ঠানের আচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করতে চান। তাঁরা যেন উপাচার্যদের নিয়ে সোমবার বেলা ৩টেয় রাজভবনে উপস্থিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বছরের কাজের রিপোর্ট, সমাবর্তন, 'ভিজ়িটর' মনোনীত সদস্য, বিধি সংক্রান্ত তথ্যাদি যেন নিয়ে আসেন।
শিক্ষা সূত্রের খবর, প্রথমে সিস্টার নিবেদিতা, সেন্ট জেভিয়ার্স, অ্যামেটির মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৈঠকে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। পরে আচার্যদের তরফে রাজ্যপালের সচিবালয়ের কমিশনারকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। রাজ্যপাল টুইটে জানান, চিঠিটি ১৮ ডিসেম্বর পাঠানো হলেও সেটি এ দিন রাজভবনে পৌঁছেছে। তাতে জানানো হয়, কোভিড পরিস্থিতি এবং ওমিক্রনের প্রকোপের কারণে তাঁরা বৈঠকে যেতে পারছেন না।
রাতের দিকে টুইট করে রাজ্যপাল জানান, এ ভাবে না-আসায় এটাই বোঝা যাচ্ছে যে, ‘ইউনিয়ন’ করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। রাজভবনের সব অনুষ্ঠানই হয় কোভিড বিধি মেনে। তাই বৈঠকে যোগ না-দেওয়ায় যে-কারণ আচার্যেরা দেখিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়, যথার্থও নয়। আচার্যদের এমন চিঠি দুর্ভাগ্যজনক বলেও জানান তিনি। তার পরেই রাজ্যপালের মন্তব্য, রাজ্যে যে-স্বৈরতান্ত্রিক পরিস্থিতি চলছে, তাতে ভয় পেয়েই এই আচার্যেরা একযোগে 'ইউনিয়ন’ করে বৈঠকে যোগ না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “ভয় আছে তো! তাই আচার্যেরা যাননি।’’
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ডাকার কোনও এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালের। এই সব বিশ্ববিদ্যালয় তৈরিতে যাবতীয় সহায়তা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকারও আইন অনুযায়ী এদের ডাকতে পারে না। ডাকেও না।" শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, এই সব ‘বেআইনি কাজ’ না-করে রাজ্যপাল যদি শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সহযোগিতা করে শিক্ষার উন্নয়নে এগিয়ে আসেন, রাজ্যের সার্বিক শিক্ষার প্রসার হয়।