—ফাইল চিত্র।
কলকাতা ও তার লাগোয়া এলাকায় সিমেন্ট ও নুন সরবরাহ হয় টালা ব্রিজের পাশে চিৎপুর রেল ইয়ার্ড থেকে। টালা ব্রিজ ভাঙার আগে তাই রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। প্রশাসনের এক কর্তা শনিবার জানান, রেলের অনুমতি নিয়ে ও রেলের সঙ্গে যৌথ ভাবে সেতু ভাঙা ও তৈরি হবে।
পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, টালা ব্রিজের তলা দিয়ে চক্ররেলও চলে। তাই ওই ট্রেন চলাচলেও যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে চাইছেন রেলের কর্তারা।
পূর্ত দফতরের ওই কর্তা জানান, টালা ব্রিজ দিয়ে ভারী গাড়ি বন্ধ করার পরে সার্কুলার ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। লাইন বন্ধ রেখে ব্রিজ ভাঙতে হলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হবে। সমস্যায় পড়বেন যাত্রীরা। রেল কর্তৃপক্ষ যখন লাইন বন্ধ রাখতে বলবেন, তখন ব্রিজ ভাঙার কাজ হবে।
নবান্নে পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, এই সেতুর তলা দিয়ে রেলের অনেক লাইন চিৎপুর ইয়ার্ডে গিয়েছে। লাইনের উপর দিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। তাই ব্রিজ ভাঙার আগে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কাজ করতে হবে। কোন সময়ে ট্রেন বন্ধ করা হবে, কখন ট্রেন চলবে তা চূড়ান্ত করবে রেলের আধিকারিকেরা। সেই মতো সেতু ভাঙা এবং তৈরির কাজ করা হবে।
ওই কর্তা জানান, শুধু রেলই নয়, অন্যান্য পরিষেবা সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা করা হচ্ছে। পুরসভা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন এবং পুলিশ-সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার কর্তাদের মতামত নিয়ে যৌথ ভাবে কাজ চলছে। গ্রেটার কলকাতা গ্যাস সরবরাহের লাইনও ওই সেতুর তলা দিয়ে গিয়েছে। তাদের আধিকারিকেরাও এলাকা পরিদর্শন করছেন। নবান্নে বৈঠকের পরে নিয়মিত আলোচনা করে কাজ এগোচ্ছে।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, টালা ব্রিজের তলায় মাটির নীচে গ্যাস, জল, বিদ্যুৎ, টেলিফোনের লাইন রয়েছে। কোথায় কী অবস্থায় সেগুলি রয়েছে, তার একটা সমীক্ষা বা ‘ম্যাপিং’ শুরু হচ্ছে। সেই কাজ শেষ হওয়ার পরে টালা ব্রিজের নতুন নকশা তৈরি হবে। টালা ব্রিজের তলা দিয়েই গঙ্গা থেকে জল সরবরাহের লাইন রাজারহাটে গিয়েছে। সেই সব পরিষেবা অটুট রেখে কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতরের প্ল্যানিং ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারেরা টালা ব্রিজ তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। পূর্ত দফতরের নর্থ ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারেরা নিয়মিত সেতুর নিচে গিয়ে নানা পরীক্ষা করছেন। সেতুর তলায় থাকা পরিবারগুলিকে সরানোর কাজের তদারকি করছেন তাঁরা।
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, বেলগাছিয়া ব্রিজের উপর থেকে পিচের আস্তরণ তোলা হবে। সেতুর ভার কমাতেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেই কাজও সতর্কতার সঙ্গে করা হবে। এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, গাড়ির চাপ এখন অনেক বেশি বেলগাছিয়া সেতুতে। তাই রাস্তা চালু রেখে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ হবে। রাতের দিকে গাড়ির চাপ কম থাকে। সেই মতো কাজ হবে।