পাহাড়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কনভয়ের দুর্ঘটনার তদন্তে নামল রাজ্য সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের এডিজি গঙ্গেশ্বর সিংহকে ওই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার এডিজি কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছে সোনাদা’র ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের ঘটনাস্থলে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গোয়েন্দা দফতরের পদস্থ অফিসাররা। এডিজি-র নেতৃত্বে দলটি রাস্তার অবস্থা, গার্ড ওয়াল, বাঁকের অবস্থা সবই খতিয়ে দেখেন। রাতে পাহাড়ে থাকার পর বুধবার বিকালের বিমানে এডিজি কলকাতায় ফিরে গিয়েছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যে তিনি রাজ্য সরকারকে দুর্ঘটনার রিপোর্ট দেবেন। দুর্ঘটনার পরেরদিনই, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের তরফেও তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দফতরের অফিসাররা গত শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।
আবহাওয়া খারাপ থাকায় ১৫ জুলাই দার্জিলিং সফর শেষ করে সড়ক পথে বাগডোগরা ফিরছিলেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপালও। রাষ্ট্রপতির গাড়ির ঠিক তিনটি গাড়ির পর ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় ছিল। ওই তিনটি গাড়ির মধ্যে এসকর্ট-১ গাড়িটি বাঁকের মুখে নিয়ন্ত্রণ গাড়িয়ে ১৫০ ফুট নিচে খাদে গিয়ে পড়ে। গাছে, ঝোপে গাড়িটি আটকে যায়। চালক-সহ পাঁচজন জখম হন। মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে বিষয়টি দেখার পর কনভয় থামিয়ে নিজে নেমে প্রায় ২৫ মিনিট ধরে উদ্ধার কাজ চালান। আহতদের মধ্যে রাষ্ট্রপতির চিফ সিকিউরিটি লিয়াঁজ অফিসার এবং রাজ্য পুলিশের একজন আইপিএসও রয়েছেন। রাষ্ট্রপতির দফতরের অফিসারকে ওই দিনই দিল্লি নিয়ে যাওয়া হলেও গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শিলিগুড়িতেই চিকিৎসা হয়েছে বাকিদের।
দফতরের কয়েকজন অফিসার জানান, রাষ্ট্রপতির ২৬টি গাড়ির কনভয়ে এসকর্ট-১ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রাজ্যের ভিআইপিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতার স্পেশাল সিকিউরিটি ইউনিটের (এসএসএউ) এক গাড়ি চালক। এই মরসুমে বৃষ্টি, ঘন কুয়াশার মধ্যে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে গাড়ি চালানোর জন্য স্থানীয় চালকদেরই দক্ষ হিসাবে ধরা হয়। সেখানে এসএসইউ-র গাড়ি চালক পাহাড়ের পথে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য, তা তদন্তে দেখা হচ্ছে। তেমনিই, কনভয়ের ট্রায়াল রান হওয়ার পরেই চালক কীভাবে বাঁকের মুখে বাম দিকে যাওয়ার বদলে ডানদিকে চলে গেলেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এসএসইউ-র ওই চালক ও কর্মীদের সঙ্গেও এডিজি কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছেন। তেমনি দু’মাস আগে গাড়িটি (স্করপিও) কেনা হলেও তাতে কোনও গোলমাল হয়েছিল কি না তা পরীক্ষা করে দেখা শুরু হয়েছে।