সর্বজন হিতায়

আমরা-ওরা থেকে এখনও বেরোতে পারল না আমাদের গণতন্ত্র। সহজ কথাটাই ধরে নেওয়া যাক না কেন। উচ্চগ্রামে প্রচার নিনাদ শুরু হয়েছে এখন। মুখ্যমন্ত্রী নাকি কথা রেখেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে উন্নয়নের রথ গড়াতে শুরু করল নারায়ণগড় থেকেই।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ০৮:১৪
Share:

আমরা-ওরা থেকে এখনও বেরোতে পারল না আমাদের গণতন্ত্র।

Advertisement

সহজ কথাটাই ধরে নেওয়া যাক না কেন। উচ্চগ্রামে প্রচার নিনাদ শুরু হয়েছে এখন। মুখ্যমন্ত্রী নাকি কথা রেখেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে উন্নয়নের রথ গড়াতে শুরু করল নারায়ণগড় থেকেই। ভক্তজনে বলছে, ভোটের ময়দানে যা বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী, ভোটের পর সেটাই করে দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নারায়ণগড় যদি সূর্যকান্ত মিশ্রকে পরাজিতের তকমা দিতে পারে, তবে তিনি ঢেলে সাজিয়ে দেবেন এই নারায়ণগড়কে, এমনটাই ছিল প্রতিশ্রুতি। হচ্ছেও নাকি তাই, নারায়ণগড় কথা রেখেছে অতএব এবার হাতে হাতে পুরস্কার।

আপাতদৃষ্টিতে এর মধ্যে কোনও বৈসাদৃশ্য নেই। এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই, নারায়ণগড় দাপুটে নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে বিধানসভায় পাঠিয়েও দীর্ঘদিন উন্নয়নের মাপকাঠিকে ছোঁয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এখানকার কোনও স্কুলের উন্নয়নের জন্য তাই হাত পাততে হয় সচিন তেন্ডুলকরের কাছে। অর্থাৎ উন্নয়ন হওয়ার দরকার ছিল। মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের মানচিত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছেন নারায়ণগড়কে। তা হলে প্রশংসাই তো প্রাপ্য তাঁর।

Advertisement

আমরা বলব উল্টো কথা। কারণ, এই কার্যপ্রণালীর মধ্যে গণতন্ত্রের বিপদঘণ্টা লুকিয়ে রয়েছে।

সরকার তো সবার। উন্নয়নের কাজে অগ্রাধিকার সে স্থির করবে এই সবার কথা মাথায় রেখেই। বিরোধীদের নির্মূল করলে পুরস্কার, এ হেন পন্থা যদি নিতে শুরু করে কেউ, তাতে আর যাই হোক ইতির লক্ষণ থাকে না। গণতন্ত্র সজীব থাকে তত ক্ষণ, যত ক্ষণ বিরোধীদের সদর্থক অস্তিত্ব বিদ্যমান।

সরকারকে মাথায় রাখতে হবে, সে কোনও দলের নয়। ‘সর্বজন হিতায়’ নীতি থেকে সরে এসে ‘বিরোধী নির্মূল ও স্বদল হিতের’ নীতি সাময়িক ভাবে বাহবা কুড়োতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বিনাশ-অভিমুখী হয়।

নারায়ণগড়ের উন্নয়ন অথবা পুলিশের শাস্তি বা পুরস্কার— সর্বক্ষেত্রেই এ নীতি মাথায় রাখলে সরকারের মঙ্গল। মঙ্গল এই রাজ্যেরও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement