ফাইল চিত্র
বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরে জনজীবনে শৃঙ্খলা ও জনসম্পত্তি রক্ষার বিলে রাজ্যপালের সই হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিল আইনে পরিণত হওয়ার পরে বিভিন্ন জেলায় একাধিক কলেজ ও স্কুলে উদ্দাম ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। কোনও ঘটনায় এখনও সেই আইন প্রয়োগ হয়নি। অথচ টেট-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ওই আইনেই সিপিএমের ছাত্র-ষুব নেতাদের জেলে যেতে হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের এই দু’মুখো নীতির বিরুদ্ধেই এ বার জোর কদমে প্রতিবাদে নামছে বামেরা।
টেট-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মিছিলের দিন ধর্মতলায় পুলিশ লাঠি চালানোর পরে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১২৩ জনকে। অথচ শৃঙ্খলা ও সম্পত্তি নষ্টের ধারা দেওয়া হয়েছে তাঁদের মধ্যে ৮ জনের বিরুদ্ধে! সেই ৮ জনই এখন জেল হাজতে। কাল, মঙ্গলবার তাদের ফের ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করার দিন আদালত পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতো সিপিএমের রাজ্য নেতাদেরও সে দিন বিক্ষোভ সমাবেশে থাকার কথা। পুলিশ এখনও মিছিলের অনুমতি দিতে নারাজ। কিন্তু সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের সিদ্ধান্ত প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা ভেঙেই মিছিল হবে। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, একে তো মিছিলকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, একই ঘটনায় একই জায়গা থেকে ধৃত ১২৩ জনের মধ্যে ৮ জনের নামে কেন ওই আইনের পাঁচটি ধারা প্রয়োগ হল, তারও সদুত্তর নেই!
আরও পড়ুন: এই ঐতিহাসিক ভোটে নয়া ভারতের জন্ম হয়েছে: নরেন্দ্র মোদী
প্রেসিডেন্সি জেলে থাকা এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেনরায়, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি সায়নদীপ মিত্রদের সঙ্গে শনিবার দেখা করতে চেয়েছিলেন সিপিএমের দুই বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় ও তন্ময় ভট্টাচার্য এবং সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে থেকে নোটিস দিয়ে আর্জি না জানালে দেখা করা যাবে না বলে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়। মানসবাবুর ফোন পেয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাতেও লাভ হয়নি। বাম নেতাদের দাবি, রাজস্থানের শিখরে এসএফআই কর্মীদের যখন জেলে পাঠানো হয়েছিল, সাংসদ হিসাবে দেখা করতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অনুমতি মিলেছিল। ঋতব্রতের কথায়, ‘‘যারা বিধানসভা ভেঙেছিল, তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েই কলেজে ভাঙচুর হচ্ছে। সেখানে এই আইন চলছে না! আর যারা দুর্নীতি করেও নবান্নে বসে আছে, তারা রাস্তায় প্রতিবাদীদের ওই আইন দিয়ে জেলে ভরছে!’’ প্রতিবাদ করতে গিয়ে জেলে যাওয়ার ঘটনাকে সামনে রেখে রাজ্য জুড়েই পথে নামার ডাক দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।