Swine Flu

করোনা আতঙ্কের মধ্যেই হাজির সোয়াইন ফ্লু, সতর্ক স্বাস্থ্য দফতর

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ওই রোগীর সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ায় কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগও বিষয়টি নজর রাখছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২০ ২০:১৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

করোনা আতঙ্কের মধ্যেই কলকাতায় এ বার সোয়াইন ফ্লু-এর থাবা। সৌদি ফেরত মুর্শিবাবাদের বাসিন্দা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এই সন্দেহে বেলেঘাটা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মেডিক্যাল টেস্টের পর জানা গিয়েছে, তিনি সোয়াই ফ্লু আক্রান্ত। যদিও বেলেঘাটা হাসপাতাল সূত্রে খবর, সৌদি আরবে থাকার সময়ই তিনি সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদিও পুরনো অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে সব রকমের প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

কলকাতার কোথাও এই প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে এখনও কোনও খবর নেই। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ওই রোগীর সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ায় কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগও বিষয়টি নজর রাখছে। শহরের প্রতিটি বরোর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে বলা হয়েছে, জ্বর-সর্দি-কাশির মতো কোনও উপসর্গ নিয়ে কেউ চিকিৎসা করতে এলে, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনে পদক্ষেপ করতে হবে। প্রয়োজনে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে দ্রুত লালারসের পরীক্ষা করাতে হবে।

সোয়াইন ফ্লু হয়েছে কী করে বুঝবেন?

Advertisement

করোনাভাইরাসের মতোই সোয়ানই ফ্লু ভাইরাসের উপসর্গও অনেকটা একই রকম। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, সংক্রমণ প্রথম স্তরে রুখতে নাপারলে বিপদ বাড়ে। শুয়োরের মাধ্যমেই সোয়াইন ফ্লু-র ভাইরাস ছড়ায়। তাই শুয়োরপালন যেখানে হয়, সেখানে বিশেষ নজরদারি জরুরি। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা।আলিপুরদুয়ার জেলার ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘করোনভাইরাসের মতো সোয়াইন ফ্লু-র উপসর্গ অনেকটা একই রকম। জ্বর, সর্দি, কাশির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। তবে, এর চিকিৎসা রয়েছে। ভাল করে হাত ধোয়ার পাশাপাশি মুখ ঢেকে হাঁচলে বা কাশলে এই ভাইরাস ছড়ায় কম।’’

আরও পড়ুন: মদ্যপান করলে বা সারা শরীরে অ্যালকোহল ছড়ালেই কি করোনা-হানা ঠেকানো যাবে?​

সোয়াইন ফ্লু থেকে কী ভাবে বাঁচবেন?

স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নমুনা পরীক্ষায় সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়লেই আক্রান্তকে আলাদা রাখা উচিত। কোনও এলাকায় একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হলে, এলাকার অন্য বাসিন্দাদের সতর্ক করা আরও জরুরি। সোয়াইন ফ্লু হাঁচি-কাশির মাধ্যমেই ছড়ায়। রোগীকে আলাদা ভাবে রাখার প্রয়োজন সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সতর্ক না হলে, আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওযার সম্ভাবনাও তৈরি হয় বলে ওই আধিকারিক জানাচ্ছেন। রোগ ঠেকাতে পশুপালকদের সচেতন করার জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন বলে মত তাঁর। তবে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। চিকিৎসকদের মতে, ‘মাস্ক’ ব্যবহার করা উচিত। পোলট্রি বা শূকর পালকদের সচেতন হতে হবে। সোয়াইন ফ্লু-র জীবাণু পশুর দেহ থেকেই মানুষের দেহে ছ়ড়ায়।

আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত ইরান থেকে উদ্ধার ৫৮ জন ভারতীয়​

রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের থাবা

২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ভারতে সোয়াইন ফ্লু (এচই১এন১) ভাইরাসের প্রকোপ সব থেকে বেশি দেখা গিয়েছে ভারতে। এ রাজ্যেও সোয়াইন ফ্লু থাবা বসিয়েছিল। অনেকেই সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। গত বছরেও কয়েকজন সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হন। বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত কেষ্টপুরের এক বাসিন্দা মারা যান। ২০১৮ সালেও নভেম্বরেও সল্টলেকে এক মহিলার মৃত্যু হয়। ওই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয় নদিয়ার ধানতলা থানা এলাকার বাগাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাড়ে পাঁচ বছরের এক শিশুর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement