ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে সক্রিয় নয় প্রশাসন, অভিযোগ

ম্যানগ্রোভ নিধনের প্রতিবাদ করে বেধড়ক মার খেতে হয়েছিল কুলতলির মৎস্যজীবী ফোরামের সদস্য সুরজিৎ মাইতিকে। চিকিৎসাধীন সুরজিতের আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। কুলতলির পূর্ব গুড়গুড়িয়া গ্রামের ওই ঘটনার পরে ৭২ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০২:১১
Share:

ম্যানগ্রোভ নিধনের প্রতিবাদ করে বেধড়ক মার খেতে হয়েছিল কুলতলির মৎস্যজীবী ফোরামের সদস্য সুরজিৎ মাইতিকে। চিকিৎসাধীন সুরজিতের আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। কুলতলির পূর্ব গুড়গুড়িয়া গ্রামের ওই ঘটনার পরে ৭২ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বন দফতরের কর্মীদের একাংশের সঙ্গে ম্যানগ্রোভ নিধনকারীদের যোগসাজশের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। এ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন মৎস্যজীবীরা।

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘একটি মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’ জেলা বন আধিকারিক লিপিকা রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ অনেক কিছুই উঠতে পারে। তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে ওই এলাকাটি বন দফতরের নয়, তাও বার বার পুলিশের কাছে এফআইআর করা হয়েছে। বন দফতরের লোকজনের বিরুদ্ধে অনর্থক অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’

ওই গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, ম্যানগ্রোভ না বাঁচলে নদীর মাছও বাঁচবে না। কিন্তু এসইউসি-র মদতে একটি বিরাট অংশে ম্যানগ্রোভ কেটে চিংড়ির ভেড়ি বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিছু গ্রামবাসী এর প্রতিবাদে নামেন। তার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সুরজিৎ। দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সভাপতি প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক মদতে এখন জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাদাবন নিধন করে ভেড়ি বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। কুলতলির ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ম্যানগ্রোভ নিধনকারীদের সঙ্গে বন দফতরের যোগসাজশ রয়েছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’

Advertisement

পরিবেশ বাঁচানো এবং মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি সংগঠনের তরফেও এই ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের তরফে এ দিন ডায়মন্ড হারবারে সাংবাদিক সম্মেলন করে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা বিষয়টি নিয়ে পথে নামবে।

হুগলির শ্রীরামপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি সুরজিৎ। তবে গাছ কাটার প্রতিবাদ করে যে ভাবে ছেলেকে মার খেতে হয়েছে তাতে সুরজিতের মা সরস্বতীদেবী শঙ্কিত। তিনি বলেন, ‘‘বড় ছেলেটাকে বাঘে খেয়েছে। ছোট ছেলেটাও যদি এভাবে আক্রান্ত হয় আমরা কীভাবে বাঁচব?’’

তবে সুরজিতকে আক্রমণের অভিযোগের আঙুল এসইউসি-র দিকে উঠলেও দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়কৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘‘ওই যুবককে মারধরের ঘটনায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যতটুকু জানি, ওখানে আগে ভেড়ি ছিল। এখন নতুন করে আবার ভেড়ি তৈরি করা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে এসইউসিকে জড়ানো হচ্ছে।’’ তৃণমূলের কুলতলি ব্লক সভাপতি গোপাল মাঝির অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর আন্দোলন করাতেই এসইউসি-র লোকেরা সুরজিতকে মারধর করেছে। এখন বাঁচার তাগিদে মিথ্যা বলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement