লোকাল ট্রেন, মেট্রোর চাকা গড়ায়নি। বাসও পর্যাপ্ত নয়। ফলে দুর্ভোগকে সঙ্গী করেই সোমবার দফতরে হাজির হলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
এ দিন থেকে সরকারি অফিসে ৭০ শতাংশ হাজিরা বাধ্যতামূলক হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন বাদে অফিস খোলায় হাজিরার পরিমাণ ৭০ শতাংশের বেশিই ছিল বলে কর্মী সংগঠনগুলির দাবি। কংগ্রেস সমর্থিত কনফেডারেশন অব স্টেট গর্ভনমেন্টস এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘অনেক কর্মচারীই ভেবেছেন যে, এত দিন বন্ধ থাকার পরে প্রথম দিন অফিস না-গেলে ছুটি-সহ অন্য ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই বহু কর্মী অনেক টাকা খরচ করে দফতরে পৌঁছেছেন।’’ বিজেপি অনুমোদিত কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলেরও বক্তব্য, ‘‘অফিস পৌঁছতে বাধ্য হয়েই সামাজিক দূরত্ব মানতে পারেননি সরকারি কর্মীরা। সরকার এ ভাবে করোনার ব্যাগ উপহার দিচ্ছে।’’ কো-অর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘করোনার প্রার্দুভাব বাড়ছে। তার পরে সোমবার দফতরে যাওয়া নিয়ে যে ছবি দেখা গেল, তাতে কর্মচারী এবং তাঁদের পরিবারের আতঙ্ক আরও বেড়ে গেল। কর্মচারীদের কথা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক সরকার।’’
তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি ফেডারেশনের অবশ্য দাবি, প্রত্যেক কর্মীর সুবিধা-অসুবিধা নজরে রেখেছে প্রশাসন। কর্মীরা যাতে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করে বা হাত ধুয়ে অফিসে ঢুকতে পারেন, সে কারণে নবান্নের উত্তর গেট এবং তার পাশের গেটে বেসিন বসানো হয়েছে। অন্য অনেক সরকারি অফিসেও একই ব্যবস্থা দেখা গিয়েছে। এ দিন সরকারি অফিসে ফেস শিল্ডের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো। হাতে হাতে ফাইল আনা-নেওয়াও অনেকটাই কম হয়েছে। বিভিন্ন দফতরে মেডিক্যাল টিমকে সক্রিয় করা হয়েছে। কর্মীদের বিশ্রামের জন্য ঘর বাড়ানো হয়েছে। সামাজিক বিধিনিষেধ মেনে লিফ্ট ব্যবহার করেছেন কর্মীরা। কোনও কোনও দফতরে সচেতনতা সংক্রান্ত পোস্টারও দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মেয়েদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি
সূত্রের খবর, যে সব সরকারি কর্মী দফতরের কাছে থাকেন, একই সঙ্গে যাঁদের প্রয়োজনীয়তা বেশি— শুধু তাঁদের গুরুত্ব দিয়ে রোস্টার তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। যাঁরা ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাঁদের বাদ দিয়েই যাতে কাজ চলানো যায়, সেই চেষ্টাও চলছে। বাড়ি দূরে হলেও অনেক কর্মীই এ দিন মোটরবাইক চেপে এসেছিলেন। তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে না-আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আপাতত আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত লোকাল ট্রেন ও মেট্রো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক। ফলে কর্মীদের পক্ষে দফতরে আসা যে ক্রমশই কষ্টকর হয়ে উঠবে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই কর্মী সংগঠনগুলির।