প্রতীকী ছবি
করোনা-কালে সারা ক্ষণই খারাপ খবরের ঘনঘটা। তার মাঝেই খুশির খবরের আভাস পাচ্ছে কৃষি দফতর। এ বার যে ভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে আমন চাষের বহর খুবই ভাল। কৃষি কর্তাদের ধারণা, অগস্ট-সেপ্টেম্বরে অতিবর্ষণ না হলে ২০২০ সালে রাজ্যে ‘বাম্পার’ ফলন হবে ধানের। ইতিমধ্যেই ২৪% জমিতে আমন রোয়ার কাজ হয়ে গিয়েছে বলে কর্তারা জানাচ্ছেন। গত বছর এই সময়ে ধান পোঁতা হয়েছিল মাত্র ২০%।
রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘‘উত্তরবঙ্গের বৃষ্টিপাত খুবই ভাল। দক্ষিণবঙ্গেও বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলে টানা বৃষ্টি হয়ে চলেছে। ফলে আমন এবং আউসের ফলন নিয়ে চিন্তা থাকছে না। বন্যা পরিস্থিতি না-হলে চাষিরা ঘরে সোনার ফসল তুলবে এ বার।’’
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এ বার ৪১ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সোয়া দু’লক্ষ হেক্টর জমিতে আউসের চাষ আগেই হয়ে গিয়েছে। ভাল বৃষ্টি হওয়ায় ২১ জুলাই পর্যন্ত ১০ লক্ষ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোয়ার কাজ শেষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ২৪%। গত বছর এই সময় পর্যন্ত ৭ লক্ষ ৪৭ হাজার হেক্টর(২০%) জমিতে ধান পোঁতার কাজ হয়েছিল।
কৃষি কর্তাদের দাবি, সরকারি ভাবে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত আমন ধান রোয়ার কাজ চলে। এ বছর সেই সময়ের মধ্যেই অধিকাংশ জমিতে চাষ হয়ে যাবে। তবে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহারের যে জমিতে পাট রয়েছে সেখানে তা কাটার পর ধান রুইতে সেপ্টেম্বর গড়িয়ে যেতে পারে। রাজ্যের শস্যগোলা বলে পরিচিত বর্ধমান, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আমন রোয়ার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। গত বছর বৃষ্টির অভাবে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে চাষের সঙ্কট শুরু হয়েছিল।
কৃষি কর্তারা জানাচ্ছেন, এখন যা অবস্থা তাতে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে গেলেই বরং ভাল। দক্ষিণবঙ্গে আর দু’চার দিন বৃষ্টি হলেই উঁচু খেতেও জল জমে যাবে। চাষের জন্য যা উপযুক্ত। সে ক্ষেত্রে অগস্টের শেষ পর্যন্ত আমনের লক্ষ্যমাত্রা পার করে দেওয়া যেতে পারে।
পাশপাশি কিছুটা বন্যা পরিস্থিতির কথাও মাথায় রয়েছে কৃষি কর্তাদের। তাঁদের আশঙ্কা,‘‘জুন-জুলাইয়ে টানা বৃষ্টিতে বরাবরই ভাল চাষ হয়। কিন্তু অনেক সময় পুজোর আগে পর পর নিম্নচাপে ফসলের ক্ষতি হওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ বার সারা রাজ্যে ভাল বৃষ্টি হওয়ায় খাল-বিল কানায় কানায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগের বৃষ্টির আশঙ্কায় তাই তাঁর কিঞ্চিত চিন্তিত।