প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।—ছবি পিটিআই।
বামেদের সঙ্গে সমঝোতাকে নিচু তলা পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে মসৃণ করতে হবে। তার জন্য রাজ্য থেকে শুরু করে ব্লক স্তর পর্যন্ত এখন থেকে যৌথ কর্মসূচি বাড়াতে হবে। দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলের প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠকে এমন পরামর্শই দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর মতে, বাম ও কংগ্রেসের জোট ঠিকমতো হলে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ছবি অন্য রকম হয়ে উঠতে পারে।
দলের কিছু নেতা ও বিধায়কদের সঙ্গে শনিবার রাতে দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন অধীরবাবু। স্বল্প নোটিসে বৈঠক হওয়ায় সব বিধায়ক অবশ্য অনলাইন বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। তবে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বৈঠকে ছিলেন। সেখানেই ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করে অধীরবাবু বলেন, সে বার বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা হলেও আসন ভাগাভাগি মসৃণ হয়নি। তাই আসনের নিরিখে বাম ও কংগ্রেস বড় সাফল্য পায়নি। কিন্তু তারা এক জায়গায় এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিকল্পের বাতাবরণ তৈরি করতে পেরেছিল বলেই বিজেপি তেমন ভাবে মাথা তুলতে পারেনি। পরবর্তী কালে সমঝোতা ছিন্ন হয়েছিল, বিরোধী পরিসরও অনেকটা দখল করেছে বিজেপি। এখনও আন্তরিক ভাবে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী সমঝোতা করতে পারলে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলকেই টক্কর দেওয়া সম্ভব।
পরে অধীরবাবু বলেছেন, ‘‘বাংলার মানুষ তৃণমূলের বিকল্প খুঁজছেন। আবার বিজেপি কেন্দ্র এবং অন্যান্য রাজ্যে কী করছে, সেটাও মানুষ অভিজ্ঞতায় বুঝছেন। এখানেই বাম ও কংগ্রেসের সামনে সুযোগ রাজ্যে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্প গড়ে তোলার। আমরা সেটা করতে পারলে আগামী বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূল বা বিজেপি, কারও জন্যই ‘কেকওয়াক’ হবে না!’’ বিজেপি এবং তৃণমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা এবং পাল্লা দিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি চালিয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
দলের প্রতি প্রদেশ সভাপতির পরামর্শ, দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশিই বামেদের সঙ্গে যৌথ আন্দোলন বাড়াতে হবে। গত পাঁচ বছরে রাজ্যের কোথায় সংগঠন ও রাজনীতির নিরিখে বাস্তব পরিস্থিতি কেমন দাঁড়িয়েছে, তা মাথায় রেখে আসন ভাগের আলোচনা করতে হবে খোলা মনে। বামেদের সঙ্গে আলোচনার ভারপ্রাপ্ত নেতা মান্নান রবিবারই সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি-র মতো বাম শরিক নেতৃত্বের সঙ্গে এক প্রস্ত কথা বলেছেন। তারই পাশাপাশি, করোনা-কালে যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরে এসেছেন, তাঁদের তালিকা ১৬ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকদের হাতে তুলে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’ ও রাজ্যের ‘উদাসীনতা’র জন্য পরিযায়ী শ্রমিকেরা কেন্দ্রীয় গরিব কল্যাণ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। তিনি নিজে দিল্লি, কলকাতা, বহরমপুর-সহ নানা জায়গায় একাধিক দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বলে যে কোনও প্রয়োজনে তাঁর রাজনৈতিক সচিব নিলয় প্রামাণিকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শও দিয়েছেন অধীরবাবু।