কার্শিয়াঙের মোটর স্ট্যান্ডের সভায় রোশন গিরি। —নিজস্ব চিত্র
মমতায় আস্থা। বিনয় তামাং-অনী্ত থাপাদের বিরুদ্ধে তোপ। বিজেপি-র বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ। এই তিন পন্থা নিয়েই প্রায় সাড়ে তিন বছর পর পাহাড়ে আত্মপ্রকাশ করলেন বিমল গুরুংপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (জিজেএম)-র নেতা রোশন গিরি। হাতিয়ার করলেন সেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকেই।
রবিবার কার্শিয়াঙের মোটর স্ট্যান্ডে রোশন গিরির এই সভা ঘিরে নতুন করে তেতে উঠল পাহাড়ের রাজনীতি। গুরুংপন্থী মোর্চার অবস্থান স্পষ্ট করে রোশন বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে আর নয়। দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ (ডিজিএইচসি) এবং পরে জিটিএ হয়েছে কংগ্রেসের আমলে। নেপালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতিও হয়েছে ইউপিএ জমানাতেই। বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আর ধোঁকা দিয়েছে। অন্য দিকে মমতা বন্দোপাধ্যায় যা বলেন, তা করে দেখান।’’
রোশনের এই বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়, তৃণমূলেই আস্থা রাখছেন গুরুং-রোশনরা। কিন্তু মোর্চার অন্য অংশ বিনয়-অনীতরাও তৃণমূলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন। পাহাড় থেকে গুরুংরা গা ঢাকা দেওয়ার পর থেকে তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন তাঁরাও। তা হলে তাঁদের সঙ্গে কি সমঝোতা? রোশন গিরি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিনয়-অনীতরাই কার্যত তাঁদের প্রধান শত্রু। তাঁদের জমানায় জিটিএ-তে বিপুল দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রোশন বলেন, ‘‘জিটিএ-র ৭০ শতাংশ টাকা পকেটে ঢুকেছে। ৩০ শতাংশ টাকার কাজ হয়েছে। এই দুর্নীতি ধরতে অডিট চাই।’’
আরও পড়ুন: ভয়ে আমার নাম বলে না বিজেপি, ভাইপো বলে ডাকে, তোপ অভিষেকের
গুরুংদের জিজেএম-এর মূল দাবি ছিল গোর্খাল্যান্ড। বর্তমান জিজেএম সেই দাবি বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে অনীতের খাসতালুকে দাঁড়িয়ে রোশন বলেন, ‘‘বিনয় তামাং এবং অনীত থাপার সঙ্গে এক মঞ্চে কখনওই দেখা হবে না। গোর্খাল্যান্ডের দাবি আমরা বিক্রি করে দেব না। জলাঞ্জলিও দেব না।’’
আরও পড়ুন: ঘর গোছাতে ডিসেম্বর থেকে ময়দানে নামছেন মমতা, একগুচ্ছ কর্মসূচি
গুরুংরা ফিরছেন বলে বেশ কিছু দিন ধরেই পাহাড়ের রাজনীতির পারদ চড়ছিল। শনিবারও পতাকা লাগানো ঘিরে গুরুংপন্থীদের সঙ্গে বিনয় তামাং পন্থীদের সংঘর্ষ হয়। রবিবার কিন্তু কার্যত কার্শিয়াঙের দখল চলে গিয়েছিল গুরুংপন্থী মোর্চা সমর্থকদের হাতে। এর পর আগামী ৬ ডিসেম্বর গুরুংয়ের সভা রয়েছে পাহাড়ে। এ প্রসঙ্গে রোশন এ দিন বলেন, ‘‘সাড়ে ৩ বছর পর আজকের সভায় লোকেদের ভিড় ছিল ট্রেলার। বিমল এলে জনসমর্থন আরও বাড়বে। ভিড় বাড়বে পাহাড়বাসীর।’’