করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে স্কুল। তাই মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের দিনের চেনা ছবি দেখা গেল না এবার। ক্যাম্পাস থাকল সুনসান। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
একটানা ৯ বার।
গত কয়েক বছরের মতো ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মাধ্যমিকে পাশের হারে রাজ্যে ফের প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর। রাজ্যের মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ৮৪ জনের মধ্যে ৯ জনই এই জেলার। এ ছাড়া রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে প্রথমও এই জেলার। মেধা তালিকায় এমন সাফল্যের পাশাপাশি গড় পাশের হারেও আগের রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। এ বার রাজ্যে গড় পাশের হার ৮৬.৩৪ শতাংশ। জেলায় পাশের হার ৯৬.৫৯ শতাংশ। গতবছর জেলায় পাশের হার ছিল ৯৬.১০ শতাংশ। অর্থাৎ এবার পাশের হারও আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। মেধা তালিকাতেও একই স্কুল থেকে একাধিক ছাত্র স্থান পেয়েছে।
জেলা শিক্ষা দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মাধ্যমিকে পাশের হারে পূর্ব মেদিনীপুর প্রথমবার প্রথম হয়েছিল ২০১২ সালে। এরপর টানা ৮ বছর ধরে পাশের হারে রাজ্যে সেরার শিরোপা এই জেলারই মাথায়। ২০১২ সালের আগে পাশের হারে প্রথম স্থান দখল করতে না পারলেও রাজ্যে মেধা তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছিলেন জেলার দুই ছাত্রছাত্রী। মেদিনীপুর জেলা ভাগ হওয়ার আগে ২০০০ সালে মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম স্থান লাভ করেছিলেন হলদিয়ার চকদ্বীপা হাইস্কুলের ছাত্র রাজিবুল ইসলাম।
জেলা ভাগের পর ২০০৯ সালে মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম হয়েছিলেন তমলুকের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রেরণা জানা। গত বছর মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম স্থান লাভ করে ভগবানপুরের মহম্মদপুর দেশপ্রান হাইস্কুলের ছাত্র সৌগত দাস। পাশের হারে জেলার ছাত্রছাত্রীদের সাফল্যে খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবক মহল। ব্যবত্তারহাট আদর্শ হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক মানস ধাড়া বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষায় জেলার ছাত্রছাত্রীদের সাফল্যে খুবই খুশি। মেধা তালিকাতেও জেলার অনেকে স্থান পাওয়ায় সকলকেই অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’
তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করা প্রণবেশ ফাদিকার বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরে ছেলেমেয়েদের ভাল রেজাল্টের জন্য পরিশ্রম করতে দেখেছি। শুধু তাই নয়, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের বাবা-মাও চান ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ায় যেন ঢিলেমি না দেয়।’’ হলদিয়ার একটি শিল্প সংস্থার কর্ণধার সঞ্জয় রাজগুরু জানান, স্থানীয় জয়নগর স্কুলে বুক ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বই বিতরণের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখেছেন, মেধাবী ছেলেমেয়েদের জেদ। যে ছাত্রের হাটে বই তুলে দিয়েছিলেন সেও আজ প্রথম হয়েছে স্কুলে। তাঁর কথায়, ‘‘মেধার সঙ্গে জেদ যুক্ত হয়েই সাফল্য এসেছে।’’
মাধ্যমিকের ফল প্রসঙ্গে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক)আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘সার্বিকভাবে পাশের হার আগের চেয়ে বেড়েছে। এটা খুবই ভাল দিক। আমাদের জেলার ছাত্রছাত্রীদের মেধার পাশাপাশি পড়াশোনায় আগ্রহ ও শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের অবদানেই এমন সাফল্য এসেছে।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |