বিক্ষোভ আছে, কাটমানি নিয়ে কোনও অভিযোগ হয়নি পুলিশে

সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ— সংক্ষেপে এটাই কাটমানি। নিয়ম বলছে, সরকারি টাকা আত্মসাৎ অথবা ওই সম্পর্কিত কোনও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে নির্দিষ্ট ধারায় মামলার সংস্থান রয়েছে।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

রাজনগর পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ। এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে হামেশাই। ফাইল চিত্র

কাটমানি নিয়ে এত ক্ষোভ, বিক্ষোভ, অসন্তোষ। কিন্তু নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হচ্ছে কি?

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রের খবর, কাটমানি বিক্ষোভের জেরে আইনশৃঙ্খলাজনিত কারণে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। গ্রেফতারও হচ্ছে। কিন্তু নির্দিষ্ট ভাবে কাটমানি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি।

সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ— সংক্ষেপে এটাই কাটমানি। নিয়ম বলছে, সরকারি টাকা আত্মসাৎ অথবা ওই সম্পর্কিত কোনও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে নির্দিষ্ট ধারায় মামলার সংস্থান রয়েছে। তবে কী ধারায় মামলা হবে সেটা পুলিশ প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। যেমন একটি ধারা হল ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯। এটি জামিন অযোগ্য ধারা। ন্যূনতম দশ বছর কারাদণ্ডের সাজা রয়েছে এই ধারায়। জন প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ হলেও এই ধারায় মামলা করার সংস্থান রয়েছে। কিন্তু এতদিনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এমন কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, “কাটমানি সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলাজনিত মামলা হয়েছে। গ্রেফতারও হয়েছে। কোতয়ালি সহ জেলার একাধিক থানাতেই এমন মামলা হয়েছে।” পুলিশ সুপারের কথায়, “কাটমানি নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে আর্থিক তছরুপের মামলা হয়নি। আমরা সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।”

Advertisement

পুলিশের কাছে কাটমানি নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ হয়নি বটে, তবে জেলার প্রতিবিধান শিবিরে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “সাত-আটটি অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ তদন্ত করছে।”

জেলা জুড়ে শাসক দলের নেতা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে একাধিক কাটমানি সংক্রান্ত অভিযোগ উঠছে। প্রায়ই জনপ্রতিনিধি নেতাদের ঘর ঘেরাও, মারধর, হুমকি, পোস্টার, লিফলেট, মিছিল, স্মারকলিপি এমনকি, সালিশির ঘটনাও ঘটছে। এই সুযোগকে হাতিয়ার করে কেউ কোনও নেতাকে বিপাকে ফেলছেন। কেউ প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে নিজের ক্ষমতা বাড়াতে তৎপর। শাসক দলের অভিযোগ, এই বিক্ষোভের ক্ষেত্রে কখনও প্রত্যক্ষ কখনও পরোক্ষ মদত থাকছে বিজেপি। প্রকাশ্যে কাটমানি নিয়ে সরব হচ্ছে গেরুয়া শিবির। তা হলে কেন নির্দিষ্ট অভিযোগ হচ্ছে না? ঘাটাল জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “এ ব্যাপারে দলগত ভাবে এখনও মামলা হয়নি। দ্রুতই পদক্ষেপ করা হবে।” একই বক্তব্য সিপিএমেরও। সিপিএমের এক নেতার কথায়, “অন্যায় হলে সেটা পুলিশ-প্রশাসনকেও দেখতে হবে। দলীয় ভাবেও মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।”

অভিযোগ করা নিয়ে টালবাহানা চলছে। বিরোধীদের অবস্থা দেখে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগ না করে বিরোধীরা বাজার গরম করার চেষ্টা করছে। প্রয়োজনে এ বার মানহানির মামলা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement