পদ পেয়ে কমিশনে পাল্টা দরবারে মুকুল

গত শীতে ঝরে গিয়েছিল। বসন্তে ফের মুকুল ফুটল তৃণমূলে! বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ঠান ঘটল মুকুল রায়ের। দলনেত্রীর সঙ্গে দূরত্বের পর্ব মিটিয়ে তৃণমূলে ইদানীং চেনা ছন্দে ফিরছেন রাজ্যসভার এই সাংসদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৪৫
Share:

গত শীতে ঝরে গিয়েছিল। বসন্তে ফের মুকুল ফুটল তৃণমূলে!

Advertisement

বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে অধিষ্ঠান ঘটল মুকুল রায়ের। দলনেত্রীর সঙ্গে দূরত্বের পর্ব মিটিয়ে তৃণমূলে ইদানীং চেনা ছন্দে ফিরছেন রাজ্যসভার এই সাংসদ। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁকে কোনও পদে ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছিল প্রবল। শেষ পর্যন্ত রবিবার সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শাসক দলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল মুকুলের পদ-প্রাপ্তির কথা। এবং পদ পাওয়ার পাশাপাশিই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের উপরে পাল্টা চাপ সৃষ্টির জন্য প্রতিনিধিদল নিয়ে দরবার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুকুলকেই।

নতুন পদের খবর পেয়ে মুকুল এ দিন বলেছেন, ‘‘দল যখনই যা দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করেছি। দলের সৈনিক হিসাবে এ বারও দলনেত্রীর নির্দেশ মেনে দায়িত্ব পালন করব।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, এখন আমার লক্ষ্য হবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যাতে বিপুল ভাবে জিতে ক্ষমতায় ফিরে আসে।’’ প্রসঙ্গত, সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীও এখন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। মুকুল কাগজে-কলমে তাঁর সঙ্গে একই সারিতে পড়বেন। দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুতরাং, মুকুল সরাসরি তাঁরই অধীনে কাজ করবেন।

Advertisement

তৃণমূলের একটি বড় অংশ অবশ্য মুকুলের পদ-প্রাপ্তির মধ্যে মমতার ভারসাম্যের খেলাই দেখছে। ওই অংশের মতে, ভোটের সময় মুকুলকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলেন তৃণমূল নেত্রী। আবার রাজ্য নেতৃত্বের যে অংশ মুকুলের প্রত্যাবর্তনে অসন্তুষ্ট, তাঁদের ক্ষোভে আরও ইন্ধন না জোগানোর জন্যই প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে রাজ্যের কোনও পদে আনা হল না। দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘এটা তো সান্ত্বনা পুরস্কার হল! চাইলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়াই যেত। কিন্তু সুব্রত বক্সীকে বিরক্ত করতে চাননি দলনেত্রী।’’ দলেরই অন্য একাংশ অবশ্য বলছে, তৃণমূলে পদ নেহাতই আলঙ্কারিক। কে দলনেত্রীর কত কাছাকাছি থাকবেন এবং দলনেত্রী কাকে কী দায়িত্ব দেবেন, সেটাই আসল কথা!

তৃণমূল নেত্রীর আস্থার ইঙ্গিত বহন করেই নির্বাচন কমিশনে সাংসদদের প্রতিনিধিদল নিয়ে দরবার করতে যাচ্ছেন মুকুল। রাজ্যে বিধানসভা ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারিতে যাতে হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই কমিশনের উপরে চাপ বাড়িয়েছে বিরোধীরা। এ বার কমিশনে পাল্টা দরবার করতে মুকুলের সঙ্গে যাচ্ছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও সুখেন্দুশেখর রায়। কাল, মঙ্গলবার বা পর দিন বুধবার ওই প্রতিনিধিদল দিল্লিতে কমিশনের সদর দফতরে যাবে। পুরনো ইনিংসে মুকুলই দলের তরফে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। ‘ব্রাত্য’ দশা কাটিয়ে প্রত্যাবর্তনের পরে তাঁকে আবার পুরনো জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে পাঠাচ্ছেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে বিরোধীরা যে হইচই করছে, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) নানা তথ্য দিয়ে তার পাল্টা বলার চেষ্টা করবে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। বিরোধীরা অবশ্য মনে করছে, বিপুল সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মজুত করার পরিকল্পনা ঠেকাতেই এমন দরবার শাসক দলের!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement