অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
বাবার পর ছেলে।
টানা পনেরো বছর কংগ্রেসের দখলে থাকা জঙ্গিপুর শেষতক ‘হাত’ ছেড়ে দিল!
বিদায়ী সাংসদ অভিজিত মুখোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন তাই নয়, পদ্ম কাঁটায় প্রায় ছিন্ন ভিন্ন হয়ে নেমে গেলেন তৃতীয় স্থানে।
প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর দু’বার জঙ্গিপুরে সাংসদ হলেও তাঁর জয়ের ব্যবধান তেমন জোরালো ছিল না। ২০১২’র লোকসভার উপ-নির্বাচনে অভিজেতিরে জয়ের ব্যবধান ছিল ২৫৩৬ ভোট , ২০১৪’য় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮১৬১। এবারেও ২৩ এপ্রিল ভোট মিটতেই সন্ধ্যেয় ফোনে বাবাকে জানিয়েছিলেন “লড়াই হবে ঠিকই, তবে জিতব।”
কিন্তু সব হিসেব গুলিয়ে দিয়েছে পদ্মের দাপট। সেই দাপটের মুখেই জঙ্গিপুরে তার চেনা আসনে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছেন তিনি। কেন এই শোচনীয় হার?
কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আশিস তেওয়ারি বলেন, ‘‘গত ১৫ বছরে জঙ্গিপুরে উন্নয়ন হয়নি এমন তো নয়। ১৯৬৭ সালে জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা থেকে এই নিয়ে জঙ্গিপুর কেন্দ্রের লোকসভা নির্বাচন হয়েছে ১৫ বার। আগের ১৪ বারের নির্বাচনে ৭ বার এই আসন দখল করেছে কংগ্রেস, সাত বার সিপিএম। এমনটা হওয়ার কথা ছিল না!’’ গত ১৫ বছরে কলেজ থেকে সেনা ছাউনি, জঙ্গিপুর রেলসেতু থেকে রাস্তা, ৫৫ কোটির জলপ্রকল্প থেকে ব্যাঙ্ক— গড়ে উঠেছে অনেক কিছু।
অভিজিতের নির্বাচনী প্রচার কমিটির প্রধান, হাসানুজ্জামান বাপ্পা মনে করেন, ‘‘গত এক বছরে কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিতের পাশ থেকে সরে গেছেন একের পর এক প্রণব-সঙ্গী বহু নেতা। এক দিন যাঁরা বাবা ও ছেলেকে ঘিরে থাকতেন, আজ তাঁরাই অভিজিতের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে মুখ্য প্রচারের ভূমিকায় ছিলেন জঙ্গিপুরে। সাংগঠনিক দুর্বলতায় শতাধিক বুথে পোলিং এজেন্ট পর্যন্ত দেওয়া যায় নি। ’’
অভিজিতের কথায়, ‘‘ভোটারদের মধ্যে মেরুকরণের চেষ্টার ফলেই এ ভাবে হারতে হয়েছে। আরএসএসের সঙ্গে আমার পরিবারকে জড়িয়ে রাজ্যের শাসক দলের মিথ্যে কুৎসায় বহু মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছেন। তাই পরিচিত মানুষও বিভ্রান্ত হয়ে সরে গিয়েছেন।’’