মেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
হাইকোর্টের নির্দেশিকা মেনে বৃহস্পতিবার মকর সংক্রান্তির মাহেন্দ্রক্ষণে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। ওই দিন ভোর থেকে শুরু হবে পুণ্য স্নান। জোর দেওয়া হচ্ছে ই স্নান এবং ই দর্শনে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
গঙ্গাসাগরের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে জন সমাগম শব্দটা। কিন্তু করোনা কালে তা কতটা স্বাস্থ্যোপযুক্ত হবে তা নিয়েই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। শেষ পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে মিলেছে মেলার ছাড়পত্র। জোর দেওয়া হয়েছে ই স্নানে। বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা ৪ মিনিট থেকে মকর সংক্রান্তির শুরু। তা চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। এ নিয়ে বুধবার মেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালতের রায়কে স্বাগত। আগেই সব ধরনের ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে। নির্দেশিকা মেনেই স্নানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ তবে আদালতের নির্দেশনামা আগে পাওয়া গেলে ভাল হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার সকাল থেকেই ভিড় জমছে সাগরতটে। সরকারি হিসাব বলছে, বুধবার বিকেল অবধি ৭ লক্ষের বেশি মানুষ সাগর মেলায় এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ লক্ষ ৩ হাজার জনের মেডিকেল স্ক্রিনিং করা হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। সেই সঙ্গে ২৩ হাজারের বেশি তীর্থযাত্রীকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হয়েছে বলেও প্রশাসন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন : আপাতত দল বড় করে পরে ছাঁকনি, নীলবাড়ির লক্ষ্যে এখন দিলীপ-নীতি
আরও পড়ুন : রাজ্যের আমলাদের ভর্ৎসনা পিএসি বৈঠকে,তলব করা হল দিল্লিতে
এ বার করোনার জেরেই ই দর্শন এবং ই স্নানে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি। বাড়িতে বসে মেলায় অংশগ্রহণ করতে ই দর্শন পোর্টাল ফলো করছেন প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ। ই স্নান বিক্রির জন্যও কলকাতার বাবুঘাট, লট নম্বর ৮ এবং মেলা প্রাঙ্গণে মোট ৩৫টি কিয়স্ক তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসন বলছে, এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৮ লক্ষ মানুষ ই স্নান অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন। ইতিমধ্যে ৩ লক্ষ মানুষের হাতে পৌঁছে গিয়েছে ই স্নানের প্যাকেট। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা শাসক পি. উলগানাথন বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের আগেই সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে ই স্নান এবং ই দর্শন।’’
মকর স্নান করতে বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ এবং বর্ধমান থেকে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন এক দল পূণ্যার্থী। বুধবার তাঁরা পৌঁছন উত্তরপাড়া দোলতলা ঘাটে। তবে তাঁরা গঙ্গাসাগরে পৌঁছতে পারেননি। তাই উত্তরপাড়ার গঙ্গার ঘাটেই তাঁরা রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। খোলা জায়গায় পুণ্যার্থীরা রাত কাটাবেন এ কথা জানতে পেরে তাঁদের হাতে কম্বল তুলে দেন উত্তরপাড়া পুর প্রশাসক দিলীপ যাদব। ব্যবস্থা করা হয় পুলিশি পাহারার।