গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রাতারাতি ‘দর্শনীয়’ হয়ে উঠেছেন অজয় তুং আর তাঁর ছোট্ট মনিহারি দোকান।
কপিলমুনির মন্দিরে ঢোকার আগে ছোট্ট এই দোকান থেকেই বুধবার হাজার দু’-এক টাকার কেনাকাটা সেরেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হঠাৎই ভিড় বেড়ে গিয়েছে অজয়ের দোকানে। মুখ্যমন্ত্রী আসায় আপ্লুত অজয় আর তাঁর পরিবার। শুধু আফসোস একটাই, মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর সংসারের সব সমস্যার কথা সে ভাবে জানিয়ে উঠতে পারলেন আর কোথায়!
বুধবার সন্ধ্যায় কপিলমুনির মন্দিরে যাওয়ার পথে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। অজয় বলেন, ‘‘ব্যাগ, মালা, পুতুল কেনাকাটা করে দিদি জানতে চান, এটার পিছনে তোমার বাড়ি? আমার স্ত্রী জানান, হ্যাঁ। বলার পরেই বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়লেন উনি। কী রান্না হয়েছে জানতে চাইলেন।’’
অজয় জানান, তাঁর ভাগ্নের ছোট ছেলে ঘরে ঘুমোচ্ছিল। মমতা জানতে চান, ও কে হয়। বাচ্চাটিকে একটি পুতুল দেন তিনি। সংসারের ভালমন্দ খোঁজ করেন। মিনিট দশেক ছিলেন। গোটা ঘটনায় বিস্ময়ের ঘোর কাটতে চাইছে না অজয়ের। বললেন, ‘‘আরও কী সব যেন কথা হল। এখন ঠিক মনেও পড়ছে না!’’ নিজের পরিবারের জন্য ‘দিদি’ প্রায় হাজার দু’-এক টাকার ঝিনুকের ব্যাগ, মালা, পুতুল কিনেছেন বলে জানালেন অজয়।
বৃহস্পতিবার অজয় জানান, কয়েক বছর আগে ধবলাট পঞ্চায়েতের মনসাবাড়ি এলাকায় বাড়ি ছিল তাঁর। সেই বাড়ি সমুদ্রপাড়ের ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। পরে মন্দিরের কাছে সরকারি জায়গায় ছোট্ট দোকান চালু করেছেন অজয়। দুই ছেলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে বাইরে থাকেন। স্ত্রীকে নিয়ে দোকানের এক কোণে মাথা গুঁজে থাকেন তাঁরা।
অজয়ের কথায়, “শুনেছি সরকার থেকে অনেকে নতুন বাড়ি তৈরির টাকা পাচ্ছেন। কিন্তু আমরা কয়েক বছর ধরে উদ্বাস্তু হয়ে বসবাস করছি। নিজেদের জমিজমা নেই। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হল না!”
তিনি আরও বলেন, “কখনও ভাবিনি মুখ্যমন্ত্রী আমার বাড়িতে আসবেন। বাড়ির সকলে খুবই খুশি। তবে অভাব-অভিযোগের সব কথা সে ভাবে বলে উঠতে পারিনি। আফসোস একটা থেকেই গেল।”