সন্ত্রাসের ঢাকা। ফাইল চিত্র।
খাস কলকাতার হোটেলেই লুকিয়ে ছিল ঢাকার ‘হোলি আর্টিজান’ কাফেতে হামলার অন্যতম মূল চক্রী। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে যখন আইএস অনুপ্রাণিত নয়া জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) জঙ্গিরা ওই কাফেতে হামলা চালায় তখন মধ্য কলকাতার হোটেলে বসেছিল দুই প্রধান চক্রী মামুনুর রশিদ ওরফে রিপন এবং তার সঙ্গী শরিফুল ইসলাম খালিদ।
রবিবার রিপনকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কাছে গাজিপুরে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাকে জেরা করেই জানা গিয়েছে ওই তথ্য।
সূত্রের খবর, ২০১৮-র জুলাইয়ে হোলি আর্টিজান তদন্ত শেষ করে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ভারতকে জানানো হয়েছিল, ওই দুই অভিযুক্ত ভারতেই লুকিয়ে।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী তদন্তে জানা যায়, রিপন এবং খালিদ বেকারি হামলার কয়েক মাস আগে এপ্রিল মাসে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসে পশ্চিমবঙ্গে।
আরও পড়ুন: ইভিএম কারচুপি জেনে যাওয়াতেই খুন গোপীনাথ, গৌরী? লন্ডনে চাঞ্চল্যকর দাবি মার্কিন বিশেষজ্ঞের
এই বাংলায় জেএমবি-র খাগড়াগড় মডিউলের অন্যতম মূল পাণ্ডা সোহেল মেহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লার তৈরি করা স্লিপার সেলের সাহায্য নিয়ে বাংলাদেশি টাকায় ৩৯ লাখ টাকা পাঠায় বাংলাদেশে দলের শীর্ষনেতাদের কাছে, হামলার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল তৈরি করতে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিহারের বেআইনি অস্ত্র কারখানা থেকে দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি তিনটি একে-২২ রাইফেল মালদহ সীমান্ত দিয়ে পাঠানো হয় ওপারে চাপাই নবাবগঞ্জে। আমের ঝুড়ির মধ্যে করে পাঠানো হয়েছিল একে-২২ রাইফেল ছাড়াও প্রায় কুড়িটি পিস্তল এবং গুলি, যা ব্যবহার করা হয়েছিল ওই হামলায়।
আরও পড়ুন: ‘#টেনইয়ারচ্যালেঞ্জ’ নিছক নির্দোষ খেলা না পিছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র? বিশ্বজুড়ে বাড়ছে সংশয়
২০১৬-র পয়লা জুলাই পাঁচ জন সশস্ত্র জঙ্গি ‘হোলি আর্টিজান’ কাফেতে ঢুকে পণবন্দি করে রাখে বেকারিতে থাকা গ্রাহকদের। এর পর তারা এক ভারতীয় তরুণী-সহ ২০ জন পণবন্দিকে হত্যা করে। খুন করে দু’জন পুলিশকর্মীকেও। সেনা এবং র্যাবের সঙ্গে গুলি যুদ্ধে সেখানেই মারা যায় ওই পাঁচ জঙ্গি।
গত বছর তদন্ত শেষে বাংলাদেশ পুলিশ দাবি করে, নব্য জেএমবি-র মোট ২১ জন ওই হামলায় যুক্ত ছিল। তার মধ্যে পাঁচ জন গুলিযুদ্ধে মারা যায়। বাকি ১৬ জনের মধ্যে আট জন বিভিন্ন সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে নিহত হয়। গ্রেফতার হয় খাগড়াগড়ের পাণ্ডা হাত-কাটা নাসিরুল্লা-সহ ছ’জন। তার পরেও ফেরার ছিল এই রিপন এবং খালিদ।
এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার পরও মূলত বাংলায় এবং কখনও কখনও বেঙ্গালুরু এবং কেরলে গা ঢাকা দিয়ে ছিল রিপন। আইএস জঙ্গি সন্দেহে ধৃত বীরভূমের বাসিন্দা মুসাকে জেরা করেও উঠে এসেছিল দুই নব্য জেএমবি নেতার নাম যারা মালদহ এবং কলকাতায় একাধিক বার বৈঠক করেছিল মুসার সঙ্গে। বাংলার বাঘ এবং আবু সুলেইমান নামে এরা মুসার সঙ্গে থ্রিমা অ্যাপসে যোগাযোগ রাখত।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)