—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এ বার থেকে সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্ট অথবা রাজ্যের যে কোনও নিম্ন আদালতে নিজেদের পছন্দসই আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে পুলিশ। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র দফতর এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে যে, রাজ্য পুলিশের ডিজি, সিআইডির এডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছাড়াও জেলার এসপি এবং কমিশনারেটকে মামলার প্রয়োজন অনুযায়ী আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। সরকারি প্যানেল থেকেই সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ করতে হবে, এই নিয়ম না মানলেও চলবে। প্যানেলের বাইরে থেকে আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু আর্থিক নিয়ম এবং প্রশাসনিক অনুমতি নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ বলছে যে, রাজ্যে নানা গুরুতর মামলায় জড়াচ্ছে প্রশাসন। একাধিক বার দেখা গিয়েছে যে, কোর্টে রাজ্যের হয়ে যথাযথ সওয়াল করতে পারছেন না সরকারি প্যানেলভুক্ত আইনজীবীরা। তার ফলে কোর্টে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ছে রাজ্য। ওই আইনজীবীরা সেই সব মামলা লড়ার ক্ষেত্রে ‘যোগ্য’ কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের একাংশে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের শীর্ষ মহল চেয়েছিল যে, নিজেদের পছন্দসই আইনজীবী নিয়োগের অধিকার দেওয়া হোক। সেই অধিকারই দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। পুলিশের একাংশের মতে, এই নির্দেশিকার ফলে সরকারি আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘লিগ্যাল রিমামব্রান্সার’-এর ক্ষমতা কমে গেল।
সরকারি কৌঁসুলিদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। উত্তরবঙ্গের এক সরকারি কৌঁসুলি সম্প্রতি হাই কোর্টে একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলার আবেদন, অভিযোগ ইত্যাদির যা বয়ান ছিল, তা দেখে বিচারপতি অমৃতা সিংহ বিস্ময় প্রকাশ করেন। ‘অযোগ্য’ আইনজীবীদের পিছনে সরকার কেন অর্থ ব্যয় করছে, তা নিয়েও কার্যত প্রশ্ন তোলেন তিনি। সেই ঘটনা শুনিয়েই প্রশাসনের একাংশ বলছে যে, শুধু আইনের মারপ্যাঁচ জানার যোগ্যতাই নয়, ইদানীং মামলায় প্রযুক্তিগত জটিলতাও বাড়ছে। তাই সাইবার এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে দক্ষ কৌঁসুলি প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি প্যানেলে থাকা প্রবীণ আইনজীবীদের অনেকেই প্রযুক্তিগত আইনি জটিলতায় সড়গড় নন। কিন্তু প্যানেল থেকেই আইনজীবী নিতে হবে, এই বাধ্যবাধকতা থাকায় অসুবিধা হচ্ছিল। সে দিক থেকেও এ বার সুবিধা হবে।