লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এবং কাশীপুর থানাকে কলকাতা পুলিশ এলাকার অধীনে আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল আগেই। এ বার ওই দুই থানা ভেঙে সাতটি থানা তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হল লালবাজারের তরফে। একই সঙ্গে, কলকাতা পুলিশের অধীনে থাকা ভাঙড় এলাকার আর একটি থানা কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সকেও (কেএলসি) ভেঙে আরও একটি থানা করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবে এ-ও বলা হয়েছে, ভাঙড় এলাকার মোট ন’টি থানাকে নিয়ে নতুন ভাঙড় ডিভিশন গঠন করা হোক। যার মাথায় থাকার কথা এক জন উপ-নগরপাল পদমর্যাদার অফিসারের। থানাগুলির সীমান্ত নিয়ে কলকাতা পুলিশের পাঠানো প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রাজ্যের ভূমি রাজস্ব দফতর। উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত থানার তালিকায় কাশীপুর থানার কোনও অস্তিত্ব রাখা হচ্ছে না।
পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন যে আটটি থানা হচ্ছে, সেগুলি হল হাতিশালা, পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, নারায়ণপুর, ভাঙড়, বোদরা এবং চন্দনেশ্বর। এদের মধ্যে কেএলসি থানা এলাকার ২৩টি মৌজার মধ্যে ১০টি মৌজা নিয়ে তৈরি হচ্ছে হাতিশালা থানা। তার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে পূর্বতন কাশীপুর থানার ন’টি মৌজাকেও। একই সঙ্গে ভাঙড় থানা ভেঙে নারায়ণপুর, ভাঙড়, বোদরা এবং চন্দনেশ্বর— এই চারটি থানা তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত তালিকায় কাশীপুর থানার অস্তিত্ব না থাকলেও পূর্বতন ওই থানাকে ভেঙে পোলেরহাট, উত্তর কাশীপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার থানা তৈরির কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এবং পরে সব চেয়ে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এবং কাশীপুর থানা এলাকায়। যার মধ্যে সিংহভাগ গোলমাল হয়েছিল কাশীপুর থানা এলাকার বিজয়গঞ্জ বাজারে। সেখানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে বোমা-গুলির লড়াইয়ে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল এলাকা। মারা গিয়েছিলেন তিন জন। অভিযোগ, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গোলমাল চললেও কার্যত দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল রাজ্য পুলিশ। এ বার সেই বিজয়গঞ্জ বাজারেই কলকাতা পুলিশের তরফে নতুন থানা গঠনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, এই ব্যবস্থায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১২০টি মৌজা কলকাতা পুলিশের অধীনে চলে যাবে। লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, দিনক্ষণ ঠিক না হলেও শীঘ্রই ওই এলাকার দায়িত্ব নেবে কলকাতা পুলিশ। সেই প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে।
লালবাজারের একটি অংশ জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এবং কাশীপুর থানা কলকাতা পুলিশ এলাকায় চলে এলে লালবাজারের সীমান্ত পৌঁছে যাবে মাতলা নদী পর্যন্ত। অর্থাৎ, কলকাতা পুলিশের এক দিকের সীমান্তে থাকবে গঙ্গা, অন্য দিকের সীমান্তে মাতলা নদী। যা বর্তমানে ভাঙড় থানার সীমানা ক্যানিং থানার সঙ্গে যুক্ত আছে।