সান্দাকফুতে বরফ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
পৌষের বাকি অর্ধেকেরও বেশি। এবং স্বভাবধর্ম মেনে দ্বিতীয় ইনিংসে হাড়কাঁপানো শীত থেকে পৌষ হতাশ করবে না বলেই হাওয়া অফিসের আশ্বাস। দার্জিলিঙে প্রবল তুষারপাত ঘটিয়ে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বাংলা থেকে বিদায় নিতেই শীতের দাপট ফেরার আভাস মিলছে। কাল, শনিবার ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই পারদ নামতে শুরু করবে বলে আবহবিদদের পূর্বাভাস। ধাপে ধাপে সেই পতনের ফলে আগামী সপ্তাহেই স্বমূর্তিতে ফিরে আসতে পারে শীত। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হচ্ছে পৌষের। তার এই ইনিংসেই বছরের শীতলতম পর্ব মিলবে কি না, তা নিয়েও চলছে জল্পনা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘নতুন বছরের প্রথম দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে। পরের সপ্তাহের শুরুতে কলকাতার তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির কাছাকাছিও নেমে যেতে পারে।’’ আগামী সপ্তাহ মরসুমের শীতলতম সপ্তাহ হতে পারে কি না, সেই ব্যাপারে অবশ্য এ দিন নিশ্চিত করে কিছু বলেননি তিনি। তবে আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’
ঘটনাচক্রে, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে মারাত্মক শীত পেয়েছিল কলকাতা। ৯ জানুয়ারি কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (৯ ডিগ্রি) ছুঁয়ে ফেলেছিল লন্ডনকে। সে-বারেও আচমকা ঢুকে পড়া উত্তুরে হাওয়ার দাপটেই হুড়মুড়িয়ে নেমেছিল পারদ। আবহবিদদের মতে, এ বারেও খাস কলকাতার তাপমাত্রা যদি ১১-১২ ডিগ্রিচে নামে, তা হলে জেলাগুলিতে তাপমাত্রা আরও কম থাকবে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। উত্তরবঙ্গেও জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
গণেশবাবু জানান, একটি অতি শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা শীতল এবং ভারী হাওয়া, যা কাশ্মীর হয়ে ভারতে প্রবেশ করে) পূর্ব ভারতের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। তার ফলেই এ বার দার্জিলিঙে এমন তুষারপাত। ওই ঝঞ্ঝার জন্যই রাজ্যের সমতল এলাকার আকাশ মেঘলা হয়ে গিয়েছিল। এ দিন কলকাতার কিছু কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টিও হয়েছে। মেঘলা থাকায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (২২.৬ ডিগ্রি) স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি নীচে ছিল। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (১৬.৬ ডিগ্রি) ছিল স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি উপরে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কম থাকায় স্যাঁতসেঁতে ঠান্ডা মালুম হয়েছে।
অবশেষে সেই ঝঞ্ঝা কেটে যাওয়ায় উত্তুরে বাতাস বয়ে আসার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দিল্লির মৌসম ভবনের খবর, আজ, শুক্রবার থেকেই পঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানায় ফের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে যাবে। কনকনে ঠান্ডা নিয়ে হাজির হতে পারে উত্তুরে বাতাস। তার ফলে আগামী সপ্তাহেই পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গায় রাতের তাপমাত্রা ৩-৫ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।