এ পর্যন্ত অভিষেকের ‘পরিচিত’ ইমন প্রকাশ্যে আসেননি। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
চিঠিতে বলা হয়েছিল সকাল ১০টায় আসতে হবে সিজিও কমপ্লেক্সে। তিনি এসে হাজির হলেন ভোরবেলায়। তা-ও আবার রাজ্য সরকারের এক প্রাক্তন আমলাকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা এই তরুণী ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত অয়ন শীলের পুত্রের ‘বান্ধবী’ বলে পরিচিত। তাঁর সঙ্গে থাকা প্রাক্তন আমলা তাঁর বাবা। একদা পশ্চিমবঙ্গের নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক বিভাস গঙ্গোপাধ্যায়।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডি জানতে পেরেছিল, অয়ন-পুত্র অভিষেক শীলের বান্ধবী ইমনের সঙ্গে যৌথ ভাবে বহু সম্পত্তি কেনা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সেই সম্পত্তির অর্থ ব্যয় হয়েছে অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকেই। অয়নের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি থেকেও পাওয়া যায় ইমনের নাম। এর পরেই নিয়োগ মামলায় ইমনের ভূমিকা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় ইডি। যদিও অয়ন-পুত্র অভিষেক তাঁর বক্তব্যে, ইমনকে নিজের ‘বান্ধবী’ বলতে অস্বীকার করেছিলেন।
এ পর্যন্ত অভিষেকের ‘পরিচিত’ ইমন প্রকাশ্যে আসেননি। তবে অয়নের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে বহু নথিতে তাঁর নাম পেয়েছে ইডি। ইমন এবং অভিষেক যৌথ মালিকানায় একটি পেট্রল পাম্প কিনেছিলেন বলে হলফনামায় জানিয়েছিল ইডি। হুগলি জেলার গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা জমির উপর সেই পেট্রল পাম্প কেনার যাবতীয় নথি আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে আসে। সরকারি সিলমোহর থাকা ওই নথি অনুযায়ী, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ১ কোটি টাকায় পেট্রল পাম্পটি কেনা হয়েছিল। অভিষেক এবং ইমন সেটি কিনেছিলেন কলকাতার বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা নন্দগোপাল শুক্ল, অজয় শুক্ল এবং আশিস শুক্লর কাছ থেকে। স্থানীয়দের কাছে পাম্পটি ‘শুক্ল পাম্প’ নামেই পরিচিত। আবার, কলকাতায় বন্ডেল রোডের উপরে অভিষেক এবং ইমন যৌথ মালিকানায় একটি ফার্মও খুলেছিলেন। তার নাম দিয়েছিলেন ‘ফসিল্স’।
বুধবার এই সব নথি নিয়ে ইমনের বক্তব্য জানতেই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, তলবের চিঠিতে ইমনকে সকাল ১০টায় আসার কথা বলা হলেও তিনি ভোরবেলা বাবার সঙ্গে হাজির হন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে। নিজের পরিচয় গোপন রাখার জন্যই ইমন এমনটা করে থাকতে পারেন বলে অনুমান। তবে বুধবার ভোরে ইডি দফতরে ঢুকলেও বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত ইমনকে বেরোতে দেখা যায়নি ইডির দফতর থেকে।