Subhas Chandra Bose

‘ঝাঁসির রানি’র প্রবীণ কণ্ঠে সুভাষ স্মরণ

মাত্র ১৪ বছর বয়সে নেতাজির সংস্পর্শে এসেছিলেন আশা। বাবা আনন্দমোহন সহায় ছিলেন অস্থায়ী আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রশাসনের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৪৭
Share:

সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে। ছবি: সুমন বল্লভ।

কণ্ঠ কাঁপছে না ৯৫ বছরের বৃদ্ধার। স্মৃতি থেকে গাইছিলেন, ‘কদম কদম বঢ়ায়ে জা, খুশি কে গীত গায়ে জা/ ইয়ে জিন্দগি হ্যায় কৌম কী, তু কৌম পে লুটায়ে জা..’! মঙ্গলবার, ১২৭ বছরের সুভাষ-জয়ন্তীর সকালে আজাদ হিন্দ ফৌজের ঝাঁসির রানিদের এক জন, ভারতী ওরফে আশা সহায় চৌধুরীর কণ্ঠে এ গান শুনে উঠে দাঁড়াল নেতাজি ভবনের ভরা প্রেক্ষাগৃহ।

Advertisement

মাত্র ১৪ বছর বয়সে নেতাজির সংস্পর্শে এসেছিলেন আশা। বাবা আনন্দমোহন সহায় ছিলেন অস্থায়ী আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রশাসনের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। মা সতী সেনের সূত্রে সুভাষ ও তাঁর অগ্রজ শরৎচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক গুরু চিত্তরঞ্জন দাশের পরিবারেরও আশা এক জন।

এ বারের সুভাষ-জয়ন্তীর সকালে নেতাজি ভবনে ছিলেন উমর নুর মহম্মদ হাবিব ইউসুফ মারফানিও। তাঁর ঠাকুরদা মেমন আব্দুল হাবিব ইউসুফ মারফানি আজাদ হিন্দ ফৌজের সেবক-ই-হিন্দ পদকে ভূষিত। গুজরাতের কাথিয়াবাড় থেকে তৎকালীন বর্মায় ব্যবসায় সফল আব্দুল হাবিব মারফানি সেই দিনের রেঙ্গুনে সুভাষের ফৌজের তহবিলে নগদ-গয়না-বিষয়সম্পত্তি মিলিয়ে এক কোটি টাকার দান উজাড় করে হাসিমুখে কার্যত ‘ফকির’ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি নিজেও নেতাজির ফৌজে যোগ দেন।

Advertisement

দেশপ্রেমের এমন সব অদম্য শিখা এবং আত্মত্যাগকে কুর্নিশ জানিয়েই সমকালের ভারতের প্রতি প্রাসঙ্গিক বার্তাটি এ দিন খুঁজল সুভাষচন্দ্রের বাড়ির এই অনুষ্ঠান। নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর অধিকর্তা সুমন্ত্র বসু বলেন, “নেতাজি ভবনে সুভাষের ভাইপো শিশিরকুমার বসুর হাতে নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো গঠনের পরে সুভাষের জীবনের নানা দিক অনুসন্ধান এবং তাঁদের উত্তরাধিকার অনুভবে ইতিহাস চর্চার মধ্যেই এ সুভাষ-মন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে।”

ইতিহাসবিদ তথা ব্যুরোর চেয়ারপার্সন সুগত বসুর বক্তৃতায় উঠে এল আজকের দিনের জন্য সুভাষচন্দ্রের এশীয় চেতনার অমর উত্তরাধিকারের কথা। তাঁর সদ্য প্রকাশিত বই ‘এশিয়া আফটার ইউরোপ’-এর সূত্র ধরে বিশ শতকে ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদের বিকল্প হিসেবে এশীয় সংযোগ সেতু গড়ার নানা প্রয়াসের কথা বলেন সুগত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সুভাষচন্দ্রের জাপান, মালয়েশিয়া, তাইল্যান্ড, চিন, ফিলিপিন্স, মায়ানমার সফরের ইতিহাস মেলে ধরেন তিনি।

সুগতের কথায়, “নেতাজি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে এশীয় চেতনায় জোর দেন। এশীয় ঐক্যের স্বপ্নে তিনি দেশবন্ধু, সান ইয়াত-সেন এবং জাপানি শিল্পী ওকাকুরার কাছে প্রেরণা পেয়েছিলেন।” আর আজকের ‘সংখ্যাগুরুবাদ চালিত’ ভারতের জন্য সলিল চৌধুরীর সুরে ‘সুনো রে সুনো দেশকে হিন্দু, মুসলমান’ গানটি শোনান সুগত। দেশের সবাইকে কাছে টানার পাথেয় হিসেবে ২০২৪-­এও অমোঘ মন্ত্রের নাম, ‘বীর সুভাষ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement