শোকের ছায়া মৃতদের পরিবারে। —নিজস্ব চিত্র।
কয়লা তুলতে গিয়ে বুধবার দুই পরিবারের চার জনের মৃত্যুসংবাদ পশ্চিম বর্ধমানের মাধাইপুরের বাউড়িপাড়ায় পৌঁছতেই নেমেছে শোকের ছায়া। ঘটনার পরে, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করেন, পেটের দায়েই কয়লা ‘কাটতে’ যান অনেকে।
পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন আন্না বাউড়ি (৫৪), তাঁর মেয়ে পিঙ্কি বাউড়ি (২৮), পিঙ্কির স্বামী শ্যামল বাউড়ি (৩৭) এবং শ্যামলের কাকার ছেলে নটবর বাউড়ি (২৫)। এ দিন শ্যামলের দাদা দুলাল বাউড়ি বলেন, “দু’চার দিন কাজ ছিল না কোনও। তাই আমার ভাই-সহ অন্যেরা গিয়েছিল, যাতে দু’একশো টাকা রোজগার হয়।” যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবারেরই অন্য একটি অংশের মত, এ দিন বাড়ির জ্বালানির জন্য কয়লা কুড়োতে গিয়েছিলেন ওই চার জন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পাড়ার বেশির ভাগ বাসিন্দা দিনমজুরের কাজ করেন। পাশাপাশি, ওই দু’টি পরিবারের সদস্যদের জব-কার্ড রয়েছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি। বিডিও (দুর্গাপুর-ফরিদপুর) দেবজিৎ দত্তেরও দাবি, “ওই এলাকায় স্বাভাবিক নিয়মেই একশো দিনের কাজ চলছে।” তা হলে কেন অবৈধ ভাবে কয়লা ‘কাটা’র অভিযোগ উঠছে? স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, একশো দিনের প্রকল্পে দিনে ২০২ টাকা মজুরি মেলে। তা-ও সারা বছর সে কাজ মিলবে এমন নিশ্চয়তা নেই। উল্টো দিকে, কয়লা কেটে বাড়ি-বাড়ি এবং স্থানীয় হোটেল, চায়ের দোকানে বিক্রি করে দিনে ৮০০-১০০০ টাকা রোজগার হয়। ফলে ঝুঁকি নিয়ে বেশি রোজগারের আশায় কেউ-কেউ ‘বেআইনি’ ভাবে কয়লা কাটতে যান।
দুর্ঘটনার পরে এলাকায় যান পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি দু’টি পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।