(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
উচ্চশিক্ষাকে প্রথমে কুক্ষিগত করা শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। এখন সেই কাজটা করছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যের উচ্চশিক্ষায় রাজভবন বনাম রাজ্য সরকারের যে নজিরবিহীন সংঘাত তৈরি হয়েছে, তার তীব্র সমালোচনা করে এমনটাই বললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। পাশাপাশিই, এক জন প্রাক্তন বিচারপতিকে যে ভাবে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারও সমালোচনা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন প্রাক্তন বিচারপতিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয়েছে। কোনও আদালতে কোনও বিচারপতির আসন খালি থাকেল কি কোনও উপাচার্যকে সেই জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হবে?’’
অভিজিৎ মনে করেন, কোনও উাপাচার্যের পক্ষে যেমন বিচারপতির কাজ সামলানো সম্ভব নয়, তেমনই, কোনও প্রাক্তন বিচারপতিও যথাযথ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পারবেন না। প্রসঙ্গ, কর্নাটক হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে প্রথমে রবান্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। রবিবার রাতে তাঁকেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেন। এই মুহূর্তে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রাক্তন বিচারপতি।
রাজভবন যাঁদের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করছে, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিজিৎ। তাঁর এ-ও প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশিকা মেনে এই নিয়োগ হচ্ছে কি? যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্যের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল চাইলে প্রতি দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদল করতে পারেন। কিন্তু তার ফলে কী অভিঘাত তৈরি হচ্ছে সেটা দেখা প্রয়োজন। এর ফলে যেটা হচ্ছে, শিক্ষক, পড়ুয়া— সবাই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’’
যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য মনে করেন, ক্রমশ উচ্চশিক্ষার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের পথ কী? অভিজিতের বক্তব্য, ‘‘এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালকেই উদ্যোগী হতে হবে। অথবা তৃতীয় পক্ষ হিসাবে আদালতকে অভিমুখ নির্ধারণ করে দিতে হবে। না হলে উচ্চশিক্ষা আরও আরও খারাপ জায়গায় পৌঁছবে।’’