তৃণমূল ছাড়লেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল ছাড়ার তালিকায় এ বার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। নিজেকে সরাসরি শুভেন্দু অনুগামী বলে ঘোষণা করে দল ছাড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সহ-সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ। যদিও দল ছেড়েও স্বস্তিতে নেই শ্যামাপ্রসাদ। কারণ, বিষ্ণুপুরের বিজেপি নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবারই রীতিমতো বিক্ষোভ করে দাবি তুলেছেন, শ্যামাপ্রসাদকে দলে নেওয়া যাবে না।
শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারিরা বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। শুভেন্দু দল ছাড়তেই তাঁর পথে হাঁটলেন শ্যামাপ্রসাদ। তাঁর অনুগামী বিষ্ণুপুর পুরসভার তিন কাউন্সিলর-সহ বেশ কয়েকজন নেতাও তৃণমূল ত্যাগ করেছেন। শ্যামাপ্রসাদের কথায়, ‘‘আমি দলের সহ-সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। দলও ছেড়েছি। শুভেন্দু অধিকারী আমার নেতা, আমার অভিভাবক। আমি শুভেন্দু অধিকারীর সৈনিক।’’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলে, তিনিও তাঁর সঙ্গেই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন।
কিন্তু পদ্মে নাম লেখানো যে সহজ হবে না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি নেতারা। শহরে বিক্ষোভ-মিছিল করে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, শ্যামাপ্রসাদকে কোনও ভাবেই দলে নেওয়া যাবে না। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহার বলেন, ‘‘শ্যামাপ্রসাদ নিজের সুবিধা মতো কখনও কংগ্রেস, কখনও তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। তোলাবাজি, মন্দিরের জায়গা বিক্রি করে দেওয়া, সারদার টাকা নয়ছয় করা, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার মতো দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমন দুর্নীতিগ্রস্ত কাউকে দলে নেওয়া যাবে না।
শ্যামাপ্রসাদকে দলে নেওয়া যাবে না, এই দাবিতে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের। বৃহস্পতিবার, বিষ্ণুপুরে। —নিজস্ব চিত্র
গত ৩৪ বছর ধরে কখনও কংগ্রেস, কখনও তৃণমূলের হয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভার চেয়ারম্যান থেকেছেন শ্যামাপ্রসাদ। বিধায়কের পাশাপাশি আবাসন, বস্ত্র, নারী ও শিশুকল্যাণ-এর মতো দফতরের মন্ত্রী থেকেছেন। তবে ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থীর কাছে হেরে যান শ্যামাপ্রসাদ। তার পরেও পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে পুর-প্রশাসকের পদে বসিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সপ্তাহ খানেক আগে তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। তার পরেই শ্যামাপ্রসাদের দলত্যাগ।