Maoist

জেলে বসেই সেট-এ উত্তীর্ণ প্রাক্তন মাওবাদী নেতা অর্ণব

আইআইটির ক্যাম্পাস থেকে পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে-জঙ্গলে হাতে একে-৪৭ নিয়ে ডেরা বাঁধেন অর্ণব।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ১৫:০৫
Share:

অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম।—ফাইল চিত্র।

জেল থেকে পরীক্ষা দিয়েই স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট(সেট)-এ সফলভাবে উত্তীর্ণ হলেন এক সময় রাজ্যের শীর্ষ মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম। রাজ্য কারা দফতর সূত্রে খবর, এর আগে কেউ জেলবন্দি অবস্থায় এ ধরনের কোনও পরীক্ষায় সফল হননি।

Advertisement

গড়িয়ার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এসকে দামের ছেলে অর্ণব ছোট থেকেই মেধাবী বলেই পরিচিত। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে খড়্গপুর আইআইটি-তে পড়াশোনা করেন। কিন্তু তিনটি সেমেস্টারের পরেই হঠাৎই খড়্গপুর আইআইটির ক্যাম্পাস ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান অর্ণব। সিপিআই (মাওবাদী)-এর রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট হয়ে তিনি ১৯৯৮ সালে যোগ দিয়েছিলেন ওই সংগঠনে। এ কথা যদিও পরে জানা যায়।

আইআইটির ক্যাম্পাস থেকে পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে-জঙ্গলে হাতে একে-৪৭ নিয়ে ডেরা বাঁধেন অর্ণব। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত মাওবাদী পলিটব্যুরো নেতা কিষেনজির অত্যন্ত স্নেহের পাত্র ছিলেন অর্ণব। লালগড় আন্দোলনের সময় অযোধ্যা-বাঘমুন্ডির পাহাড়-জঙ্গলে তাঁর গেরিলা বাহিনী নাজেহাল করে দিয়েছিল যৌথ বাহিনী থেকে শুরু করে গোয়েন্দাদের। শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা থেকে শুরু করে একাধিক মাওবাদী হামলায় অভিযুক্ত অর্ণব ২০১২ সালে হঠাৎই ধরা পড়েন আসানসোল থেকে। জেলবন্দি হওয়ার পর থেকেই ওই গেরিলা নেতা অসম্পূর্ণ থাকা উচ্চশিক্ষায় মন দেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাজেয়াপ্ত করা হবে মাসুদ আজহারের সম্পত্তি, ঘোষণা ফ্রান্সের​

আরও পড়ুন: সেনার পোশাকে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে বন্দুকবাজের হামলা, হত ৪৯, রক্ষা বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের​

জেল থেকেই পরীক্ষা দিয়ে স্নাতক হন। প্রায় ৭০ শতাংশ নম্বর নিয়ে শেশ করেন স্নাতকোত্তর পাঠ। তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, অধ্যাপনা করতে চান। তাই ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট(নেট)-এ বসার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় শেষ পর্যন্ত তিনি সেই পরীক্ষা দিতে পারেননি। প্রায় ৪০ বছর বয়সী প্রাক্তন ওই মাওবাদী নেতা এর পর সেট পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন জানান। জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে সেই পরীক্ষা তিনি দেন।

বৃহস্পতিবার হুগলি জেলে বসে তিনি তাঁর পাশ করার খবর পান। হাতে পান মার্কশিটও। সেই মার্কশিট তিনি বাড়িতে স্পিড পোস্টে পাঠিয়েও দিয়েছেন বলে জেল সূত্রে খবর। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের সদস্য রঞ্জিৎ শূর এ বিষয়ে বলেন,“অর্ণব গবেষণা করতে চায়। ওর মতো রাজনৈতিক বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। আর ততদিন সরকার নিশ্চিত করুক, যাতে অর্ণব গবেষণা-সহ ভবিষ্যতের পড়াশোনোর সমস্ত সুযোগ পান।”

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement