গাড়িতে বসে বিমল গুরুঙ্গ। —নিজস্ব চিত্র।
বিধাননগরের গোর্খা ভবনে ঢুকতেই দেওয়া হল না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ‘সুপ্রিমো’ বিমল গুরুংকে। মঙ্গলবার বিকেলে তালাবন্ধ দরজার বাইরে কয়েক মিনিট গাড়িতে বসে থাকার পর, তিনি চলে যান রাজভবনের উদ্দেশে।
তিন বছর ধরে প্রায় অজ্ঞাতবাসে থাকার পর, পাহাড়ের একসময়ের বেতাজ বাদশাহ এ দিন দুপুরে হঠাত্ই ঘোষণা করেন যে— তিনি গোর্খা ভবন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। ২০১৭ সালে, পুজোর আগেই অশান্ত পাহাড় থেকে কার্যত গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের খাতায় অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড, মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং। এর পর কখনও দিল্লিতে, কখনও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার ছেলের বিয়েতে তাঁকে দু’একবার আচমকা প্রকাশ্যে আসতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যের ত্রিসীমানায় গত তিন বছরে তাঁকে দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার সল্টলেকের গোর্খা ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনের ঘোষণা তাই ইঙ্গিত দিয়েছিল ভিন্ন রাজনৈতিক সমীকরণের। কারণ বিমল উধাও হয়ে যাওয়ার পরই পাহাড়ে ভাটা পড়ে তাঁর নেতৃত্বাধীন ‘গোর্খাল্যান্ড’ আন্দোলনের। ভাঙন ধরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায়। দীর্ঘদিনের সহকর্মী রোশন গিরি বিমলের সঙ্গে থাকলেও, সঙ্গ ত্যাগ করেন বিনয় তামাং, অনিত থাপার মতো প্রথম সারির অনেক মোর্চা নেতা।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ, কাল থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে
আরও পড়ুন: দর্শক ঢোকাতে পুজো কমিটিগুলির আর্জি খারিজ হাইকোর্টে
পরবর্তীতে শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল অ্যাডমনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-র প্রধানের দায়িত্বভার পান বিনয় তামাং। গোটা পাহাড় থেকেই প্রকাশ্যে কার্যত মুছে যায় বিমলের অস্তিত্ব। সেই পরিস্থিতিতে সটান গোর্খা ভবনে তাঁর ‘উদয়’ পাহাড়ের রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। বিনয় তামাং বা তাঁর অনুগামীরা এ বিষয়ে এখনও মুখ না খুললেও, তাঁদের নির্দেশেই যে গোর্খা ভবনের দরজা তালাবন্ধ রাখা ছিল তা স্পষ্ট।
ঘোষণা অনুযায়ী এ দিন ৫টার সময় বিমলের সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল। সময়ের প্রায় ২০ মিনিট আগেই তিনি একটি সাদা রঙের সেডান গাড়িতে এসে পৌঁছন সিটি সেন্টার-১-এর উল্টোদিকে গোর্খা ভবনের সামনে। সাদা কালো ‘প্রিন্টেড’ জামা পড়া বিমল গাড়ি থেকেই পুরনো ভঙ্গিতে রীতিমতো এক দফা ফটোসেশন করেন। তাঁর পাশে বসা ছিলেন গেরুয়া পোশাক পড়া এক ব্যক্তি। তবে গোর্খা ভবনের দরজা বন্ধ পেয়ে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেন, ‘‘যা বলার তা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেই বলব।”