বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কমিটিও গড়ে দিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।—ছবি পিটিআই।
জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতার সঙ্গে রাজ্য রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই এবং তা বুঝেই সনিয়া গাঁধী তাঁকে বাংলায় কংগ্রেসের দায়িত্ব দিয়েছেন— প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নিয়ে এই কথা স্পষ্ট করে দিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিজেপি এবং তৃণমূলের মোকাবিলায় রাজ্যে বামেদের সঙ্গে নিয়ে যে পথে কংগ্রেস চলছিল, সে দিকেই আরও এগোনোর লক্ষ্যে প্রথম দিনেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কমিটিও গড়ে দিলেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের নানা কার্যকলাপের বিরোধিতায় সাম্প্রতিক কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে নিচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। জাতীয় স্তরের ওই বোঝাপড়া রাজ্য স্তরেও কংগ্রেসের রাজনীতিতে কোনও প্রভাব ফেলবে কি না, সেই চর্চা শুরু হয়েছিল। কিন্তু অধীরের মতো কট্টর তৃণমূল-বিরোধী নেতাকে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে সেই চর্চায় জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে বলেই রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা। আর বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নেওয়ার পরে অধীরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘জাতীয় স্তরে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকতেই পারে। কিন্তু রাজ্যের পরিস্থিতি যে আলাদা, সেটা সনিয়া গাঁধী জানেন। জেনে-বুঝেই ম্যাডাম আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন এবং আমি তা পালন করব।’’
প্রয়াত সোমেন মিত্রের জায়গায় বুধবার বেশি রাতে অধীরকে প্রদেশ সভাপতি করার কথা ঘোষণা করেছে এআইসিসি। বিধান ভবনে গিয়ে এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যভার নিয়েছেন অধীর। এবং সেখানেই দলের নেতা-বিধায়কদের সামনে কংগ্রেসের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। অধীর বলেছেন, ‘‘রাজ্যে যা পরিস্থিতি, তাতে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে হবে। সেই পথেই আমরা এগোব এবং রাজনৈতিক সমঝোতাকে নির্বাচনী সমঝোতায় নিয়ে যেতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিজেপি এবং স্বৈরাচারী তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস ও বামেদের এই জোট জবরদস্ত টক্কর দিতে পারবে।’’
অধীরের জোট-বার্তাকে স্বাগত জানিয়ে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বিজেপি দেশকে ধ্বংস করছে, সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করছে। রাজ্যে তৃণমূলের শাসনেও মানুষ বিপর্যস্ত। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে একজোট করার লাইনই আমাদের বিগত পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত হয়েছে।’’
প্রদেশ সভাপতির দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম দিনেই অধীরমান্নানের নেতৃত্বে কমিটি করে দিয়েছেন বামেদের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ওই কমিটিতে আছেন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী ও নেপাল মাহাতো এবং আইনজীবী-নেতা ঋজু ঘোষাল।