পানিয়ালগুড়িতে বক্সার জঙ্গলে ওয়াচ টাওয়ার থেকে চলছে নজরদারি। ছবি: নারায়ণ দে
বক্সার জঙ্গলে আরও কিছু জায়গায় নতুন করে বাঘের পায়ের ছাপ নজরে এল বন দফতরের। এই ঘটনায় উচ্ছ্বাস বাড়ছে বন আধিকারিক থেকে শুরু করে কর্মীদের মধ্যে। ড্রোন দিয়ে খোঁজও শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে বাঘ এবং স্থানীয় মানুষজনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে। কিন্তু এ দিন কলকাতা থেকে যে বন আধিকারিকের আসার কথা ছিল, তিনি এসে পৌঁছেছেন কি না তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে জেলায়। বন দফতরের শীর্ষ স্তর থেকে বলা হচ্ছে, আধিকারিক জেলায় এসেছেন। কিন্তু জেলার কেউই তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে পারছেন না। পাশাপাশি, বাঘদর্শনের পরে যে জঙ্গল সাফারি পাঁচ দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল, তা আবার চালু হবে কিনা, সেটা আলোচনা করে ঠিক হবে বলেই জানিয়েছেন বনমন্ত্রী।
বন দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ২৩ বছর পরে বক্সায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পাওয়া গিয়েছে, তাই এই বাঘের নিরাপত্তার দিকটা এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাপারে বক্সার শীর্ষ বনকর্তাদের নিয়ে দু’টি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বাঘের নিরাপত্তার দিকগুলি খতিয়ে দেখছে। বন দফতর সূত্রের খবর, ওই মনিটরিং টিমের সদস্যেরা বক্সার আরও একাধিক জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছেন। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ সেওয়া বলেন, “মনিটরিং টিমের সদস্যরা সোমবারে তো বটেই, মঙ্গলবারেও কয়েকটি জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছেন। তবে বাঘের নিরাপত্তার কথা ভেবে বক্সার কোন কোন এলাকায় এই বাঘের ছাপ দেখা যাচ্ছে, তা বলা সম্ভব নয়।” প্রাথমিক ভাবে বনকর্তাদের একাংশের ধারণা, এই পায়ের ছাপ একই বাঘের। এবং তাঁদের মতে, এর থেকে এটাও স্পষ্ট যে, বাঘটি এখনও বক্সার জঙ্গলে রয়েছে।
কিন্তু বক্সায় ১৫টি বনবস্তিতে প্রচুর মানুষের বাস। নানা কাজে প্রতিদিন অনেকে জঙ্গলের ভিতরে ঢোকেন। এই পরিস্থিতিতে বাঘের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে এক জন শীর্ষ আধিকারিকের এ দিন আসার কথা ছিল। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রে অবশ্য জানানো হচ্ছে, কোনও আধিকারিক এ দিন বক্সায় এসেছেন বলে তাদের অন্তত জানা নেই। যদিও বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ওই আধিকারিক বক্সায় যাবেন কেন? ওঁর যেখানে যাওয়ার, সেখানে গিয়েছেন। বৈঠকও করেছেন।”
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, বক্সায় বাঘের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাঘের থাকার সম্ভাব্য সব জায়গাই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকেও চলছে নজরদারি। জলদাপাড়া থেকে আনা ৭০টি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।