দিঘার সমুদ্রতট। -নিজস্ব চিত্র।
কোভিডের নতুন বিধিনিষেধের কড়াকড়িতে সৈকতনগরী দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর বা শঙ্করপুরের পর্যটকদের এখন নাজেহাল অবস্থা।
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি মহকুমা প্রশাসন গত সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, দু’টি কোভিড টিকা নেওয়া না থাকলে অথবা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করানো র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা (‘র্যাট’) বা আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে না থাকলে পর্যটন কেন্দ্রের কোনও হোটেল বা কটেজে ঢোকা যাবে না।
প্রশাসনের যুক্তি, কোনও কোভিড আক্রান্ত যদি দিঘায় চলে আসেন তা হলে খুব কম সময়ে বহু মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। কিন্তু প্রশাসনের এই নির্দেশই চরম বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে দিঘার পর্যটকদের।
যখন কোভিডের প্রথম টিকাই সময় মতো মিলছে না, তখন দু’টি টিকা নেওয়ার সার্টিফিকেট হাতে পাওয়া রীতিমতো সমস্যার। অন্য দিকে, আরটিপিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেতে দু’থেকে তিন দিন লাগে। সেখানে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করা রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে যাওয়া অনেক সময়েই সম্ভব হয় না পর্যটকদের। আর র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা কোথায় গেলে করানো যায়, সেটাই অনেকে জানেন না।
আরও পড়ুন
নবান্ন থেকে হঠাৎই রাজভবনে, মমতার সঙ্গে ধনখড়ের দু’ঘণ্টার একান্ত বৈঠক
আরও পড়ুন
ঘনিষ্ঠ হয়েছি, কিন্তু অঞ্জনদা আর আমি ভিজে চুমু খাইনি: সন্দীপ্তা
পর্যটকদের সমস্যা মেটাতে দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন গত বুধবার ওল্ড দিঘায় সংগঠনের অফিসেই র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করলেও ওই দিন রাতেই জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়।
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজির যুক্তি, “এত মানুষের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে এক কথায় অসম্ভব। শনি-রবি বা ছুটির দিনগুলিতে এক দিনে ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যটক আসেন দিঘায়। তাঁদের সকলের কোভিড পরীক্ষা করানো কার্যত অসম্ভব।”
আবার যে সমস্ত পর্যটক মাত্র কয়েক ঘণ্টা সমুদ্রতটে কাটিয়ে ফিরে যান, তাঁদের জন্যও এই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে কোনও গাইডলাইন না থাকাতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। নির্দেশিকায় লেখা আছে, দু’টি টিকা বা কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া হোটেলে ঢোকা যাবে না। তা হলে প্রশ্ন উঠছে, যাঁরা হোটেলে না থেকে চলে যাবেন, তাঁদের কি কোথাও বাধার মুখে পড়তে হবে?
যদিও প্রশাসন সূত্রে খবর, এমন কোনও বিধিনেষেধ দিঘায় চালু হয়নি। কোভিড বিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার করে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ালে পর্যটকদের কোনও সমস্যা নেই।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো কোনও সমস্যাই নয়। নিকটবর্তী যে কোনও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলেই বিনামূল্যে মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যেই এই সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব।
তবে পর্যটকদের প্রতি জেলা প্রশাসনের আবেদন, “কোনও করোনা উপসর্গ থাকলে বাড়ি থেকে বেরনোর আগেই কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নিন। না হলে কোনও কোভিড আক্রান্ত কিছু সময়ের জন্য দিঘায় বেড়াতে এলেও তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।”
তাই কেউ আইনের ফাঁক গলে নিজের ও অন্যদের জীবনে যাতে বিপদ ডেকে না আনেন, তার জন্যও সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে।