ছবি পিটিআই।
চলতি মরসুমে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রাজ্য। সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ধান কেনা হবে। খাদ্য দফতরের খবর, ২০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। এর জন্য কমবেশি ২২০০ কোটি টাকা হাতে রাখতে হচ্ছে। টাকা সরাসরি চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যাবে।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ ভাবে ধান কেনার মরসুম চলে ২৫ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। কিন্তু লকডাউনের জন্য কৃষকেরা এত দিন তা বিক্রি করতে পারেননি। তাই ধান কেনার সময়সীমা কয়েক মাস বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। কৃষকদের ঘরে থাকা আউশ ও আমনের সঙ্গে চলতি বোরো ধানও কেনা হবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রেশনে চাল দিতে হবে উপভোক্তাদের। তা ছাড়া রয়েছে মিড-ডে মিল, অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্প। প্রাথমিক ভাবে যে-কুড়ি লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে, তার থেকে প্রায় ১২ লক্ষ মেট্রিক টন চাল মিলবে। রাজ্যের ভাঁড়ারে থাকা প্রায় আট লক্ষ মেট্রিক টনের সঙ্গে নতুন সংগ্রহের সাত লক্ষ টন চাল যুক্ত করলে রেশনে ভাল ভাবেই জোগান দেওয়া যাবে। বাকি প্রায় পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন চাল যাবে মিড-ডে মিল, অঙ্গনওয়াড়িতে। নিয়ন্ত্রণ শিথিল হওয়ার পর থেকে বুধবার পর্যন্ত ৪৮১টি সেন্ট্রাল পার্চেজ়িং সেন্টারের (সিপিসি) মাধ্যমে চাষিদের কাছ থেকে ৯৩ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। এ মাসে ধান সংগ্রহের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন।
খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “লক্ষ্যমাত্রা ২০ লক্ষ মেট্রিক টন। তবে তার বেশি ধান কৃষকদের হাতে থেকে গেলে তা-ও কিনে নেওয়া হবে। আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুত। অন্নদাত্রী কর্মসূচি শুরু হয়েছে।”
এমনিতেই রাজ্যের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তার উপরে রয়েছে সামাজিক প্রকল্পগুলিতে বিপুল ব্যয়ের চাপ। তা ছাড়া ছ’মাস রেশনে খাদ্যশস্য দিতে হবে নিখরচায়। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য দফতরের কর্তারা মনে করছেন, কেন্দ্রের কাছ থেকে বকেয়া অর্থ পাওয়া গেলে পুরো কাজটা সুষ্ঠু ভাবে সেরে ফেলা সম্ভব হত। সংশ্লিষ্ট শিবিরের ব্যাখ্যা, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার হয়ে প্রায় এক লক্ষ ২১ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করেছিল রাজ্য। তার টাকা বকেয়া আছে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সংগৃহীত হয় প্রায় এক লক্ষ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল। ওই বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিক পর্যন্ত টাকাও বকেয়া।
তার উপরে এখন সব কর্মসূচি পালনে মাসে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে খাদ্য দফতরের। “সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে বকেয়া রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেই টাকা হাতে পেলে দফতরের উপরে এতটা আর্থিক বোঝা চাপত না,” বলেন খাদ্য দফতরের এক কর্তা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)