হোটেলের রান্নাঘরে রাখা খাবারের গুণমান পরীক্ষায় সরকারি আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
হোটেল ঝকঝকে। বসার জায়গাটিও বেশ। কিন্তু হেঁশেলে ভন ভন করছে মাছি। অন্ধকারাচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে রান্নাবান্না। আর মজুত থাকা অধিকাংশ খাবারই হয় পচা নয়তো বাসি! মঙ্গলবার দিঘার একের পর এক হোটেলের রান্নাঘরে অভিযান চালিয়ে তাজ্জব হয়ে গেলেন খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। পর্যটক এবং অন্যান্য লোকজনকে যে সব খাবার খাওয়ানো হচ্ছে, তা দেখে উদ্বিগ্ন সরকারি তাঁরা। বেশ কয়েক’টি হোটেলকে আইনি নোটিস ধরানো হয়েছে। ওই হোটেল কর্তৃপক্ষদের জরিমানাও করা হতে পারে। পুনরায় এই কাজ করলে ধরা পড়লে ‘বড়’ আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
দিঘার বিভিন্ন হোটেল এবং রেস্তরাঁয় মাঝেমধ্যেই নিম্ন মানের খাবার বিক্রির অভিযোগ ওঠে। এই কারণে সমুদ্রসৈকত এলাকার দোকানগুলিতে দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছেন খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২৫টি হোটেলে গিয়েছেন আধিকারিকেরা। কয়েকটি হোটেলে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখে নাকে রুমাল চাপা দিতে হয়েছে। কোথাও কোথাও বাসি, পচা খাবার রাখারও অভিযোগ ওঠে। এমন হোটেলের সংখ্যা ১৩টি। ওই তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু ঝাঁ চকচকে হোটেলও। শীঘ্রই হেঁশেলের পরিবেশ বদলাতে বলা হয়েছে। খাবার-দাবার নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে হোটেলমালিকদের।
জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, “আমরা নিয়মিত ভাবে হোটেলগুলিতে অভিযান শুরু করেছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখছি, বহু হোটেলের রান্না করা খাবার পরিবেশনের পর্যাপ্ত অনুমোদন নেই। কিছু জায়গায় নিম্নমানের খাবার রাখা ছিল। এমন ছয়-সাতটি হোটেলে আইনি নোটিস দেওয়া হল। তাঁদের এক সপ্তাহের মধ্যে উপযুক্ত লাইসেন্স নেওয়া এবং বাসি খাবার মজুত বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেক সময়ে মাছে রং মাখানো বা ফর্মালিনের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এই জন্য আমরা বিভিন্ন হোটেলে রাখা কাঁচা মাছের নমুনা সংগ্রহ করেছি। সেগুলো পরীক্ষা করে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, সে ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’