আর কিছু ক্ষণ পরেই কলকাতা হাই কোর্টে শুরু হবে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার পুনর্বিবেচনার শুনানি। বিচার করবেন ৫ বিচারপতির বেঞ্চ। গত শুক্রবার এই মামলায় রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট। কঠোর সমালোচনা করা হয়েছিল রাজ্যের ভূমিকার। রবিবার উচ্চ আদালতের সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। তারই প্রেক্ষিতে ফের শুরু হতে চলেছে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার শুনানি।
২ মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির অভিযোগ ওঠে। মূলত বিজেপি-র তরফ থেকেই সেই অভিযোগ করা হয়। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও এ নিয়ে সরব হন। বিজেপি-র অভিযোগ, ভোটের পরে হিংসার কারণে অনেকের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রাণের আশঙ্কায় ঘরছাড়া হতে হয়েছে বহু মানুষকে। ভোট পরবর্তী অশান্তির ওই চিত্র তুলে ধরে গত মাসে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কমিটিতে ছিলেন জাতীয় ও রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির সদস্যরা। লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির কাছে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি ইমেল আইডিও চালু করা হয়। সেখানে ৩২৪৩টি অভিযোগ জমা পড়ে। ওই রিপোর্ট সামনে আসার পরই হাই কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল রাজ্যকে তিরস্কার করে জানান, আমাদের পর্যবেক্ষণে ভোট-পরবর্তী হিংসার প্রমাণ রয়েছে। অথচ গোড়া থেকে হিংসার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল রাজ্য। লিগ্যাল সার্ভিস রিপোর্টও রাজ্যের যুক্তির সঙ্গে মেলেনি।
গত শুক্রবার উচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি দল বা কমিটি গঠন করবে। তারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে হিংসার রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করবে। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে কী উঠে এল ৩০ জুনের মধ্যে তা আদালতে জমা দিতে হবে। তাদের সাহায্য করবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশ। কোনও অসহযোগিতার অভিযোগ উঠলে তার দায় নিতে হবে রাজ্যকেই। এই নির্দেশ মানা না হলে আদালত অবমাননার দায়েও পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করেন বিচারপতিরা। হাই কোর্টের ওই নির্দেশের পরই রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে বিভিন্ন মহলে। রবিবার ওই রায়কে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। রাজ্যের সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টায় ফের এই মামলার শুনানি হবে। ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে বিচার করবেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন, বিচারপতি সৌমেন সেন, বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।