প্রতীকী ছবি।
“হায়রে বিজেপি /আনল এনআরসি/ আগুন নিয়ে মোদী খেলছ খেলা/ তোমরা ভোট দিয়ে জিতাইছ/ বোঝো ঠ্যালা।” এনআরসি নিয়ে এবারে লোকসঙ্গীতের সুরে গান বেঁধে বিজেপি ও কেন্দ্রের মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন এক শিল্পী।
ওই গান ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যেই। কোচবিহারের দিনহাটার নয়ারহাটের ওই শিল্পীর নাম মীর আলাম্মা কবীর। তিনি এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাঁর দাদা মীর হুমায়ুন কবীর তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য। রাজনৈতিক সভা-মিটিংয়ে প্রথমে কংগ্রেস ও পরে তৃণমূলের হয়ে গান গেয়ে প্রচার করেন তিনি অষ্টম শ্রেণি পড়ার সময় থেকেই। তিনি বলেন, “আমি তৃণমূল করি। লোকসঙ্গীত গেয়ে তৃণমূলের হয়ে প্রচারও করি। কিন্তু এনআরসিতে অসমে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এনআরসি নিয়ে গান লিখে সুর দিয়েছি।”
অসমের নাগরিকপঞ্জি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই কোচবিহারে উত্তাপ ছড়ায়। জেলার বহু মেয়ের বিয়ে হয়েছে অসমে। তাঁদের অনেকেরই নাম নেই ওই তালিকায়। এ ছাড়াও অসমের বহু ভূমিপুত্রদের নাম নেই। সব নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অনেকেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মাঠে নেমেছে তৃণমূল। প্রতিদিন নিয়ম করে এনআরসি বিরোধী মিটিং মিছিলে বিজেপিকে অনেকটাই ব্যাকফুটে বলে তৃণমূলের কর্মীদের অনেকের দাবি। এ বারে লোকসঙ্গীতেও বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হল ওই দলেরই কর্মী।
শিল্পী গানে লিখেছেন, “খাল কাটি আনছ কুমীর/ করছ সর্বনাশ।” ওই গানেই উল্লেখ রয়েছে অসমের কথায়ও। সেখানে রয়েছে, “অসমের গান গণ্ডগোল/ মানুষের চোখের জল/মানুষের হইছ মরণজ্বালা/ ভোট দিয়া জেতাইছ বোঝো ঠ্যালা।” আবার কারাগারে রিফিউজিদের বন্দি করার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এনআরসি’র নামে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কের মধ্যে রাখা হয়েছে। বিজেপি’র নেতারা মাঝে মধ্যেই এনআরসি করে মানুষকে তাড়ানো হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। তার প্রতিবাদ সর্বস্তরে শুরু হয়েছে। ওই শিল্পী গানের মাধ্যমেই প্রতিবাদ করেছেন।”
বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, এনআরসি নিয়ে মানুষকে ভুল ও মিথ্যে কথা বলে বিভ্রান্ত করছে তৃণমূল। নানা ভাবে তা করা হচ্ছে। এই গানও তার অঙ্গ বলে বিজেপির দাবি। দলের কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “মানুষ তৃণমূলের চক্রান্ত বুঝে গিয়েছে। এনআরসি নিয়ে বক্তব্য দিয়ে ও গান করে মানুষকে ভুল পথে নিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তৃণমূলকে জবাব দিতে শুরু করবেন সাধারণ মানুষ।”