কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যে এসে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে সুর চড়ালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই সঙ্গে সরব হলেন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও। যার জেরে তাঁর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা রাজনীতি’ করার অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে মঙ্গলবারই আবার ‘রাজধর্ম’ পালন করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন বিজেপি-শাসিত ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই।
জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে এ দিন নির্মলা দাবি করেন, “ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থা এবং আইন-শৃঙ্খলার তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ প্রায় নীচের দিকে।” তিনি বলেন, ‘‘গত জানুয়ারিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে কী ভাবে ইডি আধিকারিকরা উন্মত্ত জনতার দ্বারা আক্রান্ত হন। গুরুতর জখম হন। তার পরেও পুলিশ রাজনৈতিক প্রভুদের নির্দেশ মতো কাজ করে।’’
শাহজাহানের গ্রেফতার না হওয়া নিয়েও এ দিন সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন নির্মলা। তাঁর কথায়, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এখনও গ্রেফতার হয়নি। প্রশাসনের ঔদ্ধত্য দেখে অবাক হতে হয়!” তাঁর অভিযোগ, “সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ মন্ত্রীরা যাচ্ছেন। কী বলা হচ্ছে? বলা হয়েছে, ৭ দিনে গ্রেফতার করা হবে। তার মানে আপনাদের জানা আছে, উনি (শাহজাহান) কোথায় আছেন!’’ পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। বলা হয়েছিল, আদালত হাত-পা বেঁধে দেওয়ায় গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। এখন যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করা হবে। সেটা পাঁচ দিন হতে পারে, সাত দিন হতে পারে, ১৫ দিন হতে পারে।”
মণিপুর নিয়ে তৃণমূলের ভূমিকা মনে করিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, “সংসদে মণিপুর নিয়ে কত প্রশ্ন! কেন গেলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? তিনি তো সেখানে গিয়েছেন। শিবিরে থেকেছেন। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার, নিয়েছেন।”
মমতাকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সন্দেশখালির ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করার পরামর্শ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের মা-বোনেদের সঙ্গে যে অন্যায়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তা বেদনাদায়ক। মনকে কষ্ট দেয়। আপনার রাজ্যে সন্দেশখালিতে ৫০-এরও বেশি জনজাতি সম্প্রদায়ের মহিলার উপরে অত্যাচার, হাজার আদিবাসীর কাছ থেকে জমি কেড়ে নেওয়া, এমনকি ১০০ দিনের কাজের টাকাও ছিনিয়ে নেওয়ার মতো যে ঘটনা ঘটছে, তা-ও অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’ তাঁর সংযোজন, “বাংলার সংস্কৃতি গোটা বিশ্ব জানে। আপনার রাজ্যে যে অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তা সভ্য সমাজ সহ্য করতে পারে না।” দিল্লিতে এ দিনই তৃণমূলের দুই রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখেল ও সুস্মিতা দেব পাল্টা বলেছেন, গণধর্ষণ-সহ গত কয়েক দিনে ছত্তীসগঢ়ে ওঠা নানা অভিযোগের দিকে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আগে নজর দিন!