পরেশ মণ্ডল। মৎস্যজীবী
বাপ-দাদার হাত ধরে সেই ছেলেবেলায় পদ্মাকে চিনেছি। তার বুকে ভেসেই টেনেটুনে চলে সংসার। এক দিকে পদ্মা যেমন আমাদের ভিটেমাটি কেড়ে নিয়েছে, অন্য দিকে সেই পদ্মাই আবার দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। দেশভাগ হলেও পদ্মা ভাগ হয়নি। ভারত, বাংলাদেশ ছুঁয়ে সে বয়ে চলেছে। মাছ ধরার ক্ষেত্রে তেমন কোনও বিধি-নিষেধ ছিল না। ওদেশের মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে রুটি চেয়ে খেয়েও দিন কাটত আমাদের। আবার আমাদের চুলোর আগুন নিয়ে ওরা নৌকায় উনুন ধরাত।
ধীরে ধীরে সীমান্ত বদলেছে। কোথাও কোথাও কাঁটাতারের বেড়াও বসেছে। কিন্তু কাকমারি এলাকায় অন্য ছবি। কাকমারি ও বাংলাদেশের চারঘাটের মৎস্যজীবীদের খাবার জোটে পদ্মায় মাছ ধরেই। মাছ ধরা নিয়ে ছোটখাট সমস্যা এর আগেও হয়েছে। কখনও বিজিবি ধরে নিয়ে গেছে আমাদের। কখনও আবার বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে ওপারের মৎস্যজীবীরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বকাঝকা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সমস্যা গুরুতর হলে ফ্ল্যাগ মিটিং করে সমস্যা মিটেছে।
কিন্তু এ দিনের ঘটনা আমরা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। মাছ ধরা নিয়ে একজন বিএসএফের জওয়ান প্রাণ হারাবে এখনও ভাবতে পারছিনা। বিএসএফের যদি এমন হাল হয় তা হলে কোন ভরসায় আমরা পদ্মায় নামব, বলুন তো!