কৃত্রিম পুকুরে চলছে মাছ চাষ। নিজস্ব চিত্র
কৃত্ৰিম পদ্ধতিতে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ শুরু হল। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম সরকারি উদ্যোগে মাছ চাষ শুরু করল বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রাম্য এলাকায় বিশেষত পাহাড়ি এলাকায় পুকুরের বড় অভাব রয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে কৃত্ৰিম পদ্ধতিতে জলাশয় তৈরি করে মাছ চাষের প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি। এখন পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে পর্ষদের প্রকল্প এলাকার দু’জায়গায় বায়োফ্লেক প্রযুক্তিতে মাছ চাষ শুরু হয়েছে।’’
বায়োফ্লেক প্রযুক্তি কী?
সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের সচিব সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘এই প্রযুক্তি পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতি যা জলের গুণমান ও ক্ষতিকারক রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে।’’ আপাতত পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ে পর্ষদের কুমারীকানন প্রকল্প এলাকায় কই, শিঙি, মাগুর, চিংড়ি, পাবদা, ট্যাংরা মাছের চাষ শুরু হয়েছে। আগামী দিনে শীঘ্রই সারা রাজ্যে পর্ষদের ১১টি প্রকল্প এলাকায় এই প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করা হবে।
এক কথায় বায়োফ্লেক হল ব্যাকটেরিয়া, জীবিত ও মৃত বস্তুগত জৈব পদার্থ ইত্যাদি অনুজীবের সমষ্টি। পুকুরের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বড় খাঁচা তৈরি করে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয়। কৃত্ৰিম জলাশয়ে পুষ্টিকর খাদ্যের উৎস সরবরাহ করা হয়। যার ফলে মাছ খুব তাড়াতাড়ি বংশবিস্তারে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের মৎস্য আধিকারিক বিজন কুমার মণ্ডল।
বিজনবাবু বলেন, ‘‘এই পদ্ধতিতে মাছের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। জলে আমোনিয়ার মাত্রা না বাড়িয়ে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া, অনুজীব অশৈবালের মিশ্রণ জলকে ক্রমেই পরিস্রুত করে।"
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, বছর খানেক আগে হলদিয়ায় বেশ কিছু মাছ চাষি এই পদ্ধতি শুরু করেছেন। বিজনবাবু জানান, পুকুরে মাছ চাষের ক্ষেত্রে খরচের অনেকটাই মাছের খাবার ও রোগ প্রতিরোধী ওষুধে চলে যায়। সে ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি লাভজনক।