ফাইল চিত্র।
২১ জুলাইয়ের মঞ্চে সিবিআই-ইডি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতৃত্বের আক্রমণ শানানোর পরের দিনই রাজ্যের ১৩টি এলাকায় হানা দিয়েছে ইডি। এসএসসি মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বাড়িতে ইডি হানার নেপথ্যে বিজেপির ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ দেখছে তৃণমূল।
এই প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘হাই কোর্ট অকারণে হেনস্থা করতে বলেনি। কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। হাই কোর্ট সিবিআইয়ের কথা বলেছে। এখন ইচ্ছা করে আর্থিক তছরুপের মামলা ঢোকানো হচ্ছে। বেইজ্জত করতে এ সব করা হচ্ছে।’’
বিজেপিকে নিশানা করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘ইডির তৎপরতা আগে কখনও দেখিনি। রাজনৈতিক নেতাদের হেনস্থা করা বিজেপির হাতিয়ার। বাংলায় বিজেপির কিছু নেই। বাংলার বিজেপির শক্তি ইডি। গত কাল আমরা কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছি। লড়াই শুরু হয়েছে। তাই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।’’
উল্লেখ্য, ইডি-সিবিআইকে দিয়ে ‘কেন্দ্রীয় সরকারের ভয় দেখানোর রাজনীতি’ নিয়ে অতীতেও সরব হতে দেখা গিয়েছে মমতা বাহিনীকে। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে আবারও কেন্দ্রের ইডি-সিবিআইয়ের ‘অপব্যবহার’ নিয়ে মমতা কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন, ‘‘সিবিআই এলে বলবেন, আসুন আসুন বসুন। আসন পেতে দেবেন। সামনে গ্যাসের সিলিন্ডার রেখে দেবেন। সিবিআই-ইডি বাড়িতে এলে থালায় করে মুড়ি খেতে দেবেন।’’
শুক্রবার সকালে মেখলিগঞ্জে পরেশের বাড়িতে হানা দিয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। এই প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্যের রেশ বজায় রেখে আনন্দবাজার অনলাইনকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘কলকাতায় আছি। বাড়িতে ফোন করেছিলাম। কিন্তু সব ফোন নিয়ে নিয়েছে। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। তাই বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে। বাড়িতে থাকলে দিদির নির্দেশে মুড়ি খাওয়াতাম।’’
অন্য দিকে, ইডি-হানা প্রসঙ্গে তৃণমূলকে বিঁধে বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আরও আগেই এই তল্লাশি হওয়া উচিত ছিল। হয়তো ইডির লোকবল ছিল না বলে আগে করতে পারেনি। নারদা-সারদা থেকে দেখছি, বাংলায় যে ভাবে সীমাহীন দুর্নীতি চলছে, তাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও আমরা লজ্জিত। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সে ভাবেই এগোচ্ছে তদন্ত। তাতে অনেকে চিন্তা করছেন। কেউ কাল লোক জমায়েত করে চোখ রাঙাচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন। চুরিও করবেন, চোখ দেখাবেন, দুটো তো হতে পারে না। যার যার নাম শোনা গিয়েছে, প্রত্যেক জায়গায় তল্লাশি করা উচিত। সমস্ত অভিযোগের বিচার হওয়া উচিত।’’