কলকাতা পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে তৃণমূল থেকে আসা অনেক নেতাই বিজেপি-র সঙ্গে দূরত্ব রাখতে শুরু করেছেন। কয়েকজন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকজন সংখ্যালঘু নেতাও রয়েছেন। ইতিমধ্যেই বিজেপি-র সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি পদ ছেড়েছেন কাশেম আলি। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন একদা ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম। এখন বিজেপি ছেড়ে তিনিও ‘ঘরওয়াপসি’ চাইছেন। আর এঁরা সকলেই তাকিয়ে রয়েছেন ফিরহাদের দিকে। তাঁদের জন্য একটু হলেও আশ্বাসবাণী শোনালেন ফিরহাদ। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘সিদ্ধান্ত নেবে দল। কিন্তু আমি মনে করি ভুল করে যাঁরা সত্যিই অনুতপ্ত তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।’’
২০১৭ সালে মুকুল রায়ের সঙ্গেই বিজেপি-তে যোগ দেন কাশেম। সম্প্রতি তিনি দিলীপ ঘোষকে চিঠি পাঠিয়ে দায়িত্ব ছেড়েছেন। ভোটের আগে আগে বিজেপি-তে যোগ দেন হুগলির পুরশুড়া আসনের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শেখ পারভেজ রহমান। একই দিনে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন হুগলি জেলার চণ্ডীতলা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন খাদ্য সরবরাহ কর্মাধ্যক্ষ আলমগির মোল্লা। এঁরা সকলেই এখন তৃণমূলে ফিরতে চান। এঁদের সকলেরই বক্তব্য, ফিরহাদই তাঁদের রক্ষা করতে পারেন। এই প্রসঙ্গে কবিরুল বলেন, “আমাদের রক্ষা করতে পারেন ববিদা। ওঁর হাত ছাড়াটা আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের বড় ভুল। আমি দেখা করে ক্ষমা চাইতে চাই।” ফিরহাদের দিকে তাকিয়ে আছেন কাশেমও। তিনি বলেন, ‘‘আমি একা নই। আমাদের সঙ্গে রাজ্যের অনেক সংখ্যালঘু নেতা, কর্মী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে চাই।’’
দলবদলে বিজেপি-তে যাওয়াদের অনেকেই আশায় ছিলেন, শনিবারের বৈঠকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে তৃণমূল। কিন্তু তা হয়নি। তৃণমূলের পক্ষে জানানো হয়েছে, এই বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দেখবেন। তবে তৃণমূল ভবনের ওই বৈঠকের আগেই শনিবার কলকাতা পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ বলেন, ‘‘দল কোনও মন্দির নয় যে কেউ ইচ্ছা মতো এসে ঘণ্টা বাজিয়ে চলে যাবে। তাই সবাইকে না হলেও যাঁরা সত্যিই অনুতপ্ত তাঁদের কথা ভাবতে পারে দল। আমি মনে করি ক্ষমার চোখে দেখা যেতে পারে। তবে কোনওটাই আমার সিদ্ধান্তে হবে না।’’