ফিরহাদ হাকিম ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
নেটমাধ্যমে বিজেপি নেতৃত্বের সমালোচনা করে সম্প্রতি সুর বদল করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই শুরু হয় তাঁর তৃণমূলের ফেরার জল্পনা। তদন্তের ভয়ে রাজীব তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন এমন অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলে। বুধবার এমন কথা বলেছেন ডোমজুড়ে রাজীবকে হারানো কল্যাণ ঘোষ। কিন্তু সেই অভিযোগ উড়িয়ে রাজীবের পাশে থাকার বার্তাই দিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রাজীবের বোধোদয় বিলম্বিত হলেও তা ভাল বলেই মনে করেন ফিরহাদ। বৃহস্পতিবার রাজীব প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘রাজীব আমার ছোট ভাইয়ের মতো। কেন ওর এমনটা হল? কেন বিজেপি-তে গেল? এটা আমার কাছেও বিস্ময়ের। যাওয়ার আগের আগের দিনও ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। শেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিনেও আমি ফোন করেছিলাম। কিন্তু দেরিতে হলেও, যদি বোধোদয় হয়, তা হলে সেটা ভাল লক্ষণ।’’
ডোমজুড়ে বড় ব্যবধানে হারার পরে বিজেপি-র সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন রাজীব। তখন থেকেই তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের জল্পনা শুরু হয়। তবে রাজীবের সাম্প্রতিক সুর বদল নিয়ে তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ ও বন দফতরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়াতেই তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক। কারণ, দীর্ঘ ৮ বছরের সময়কালে কখনও সেচ বা কখনও বন দফতরের মন্ত্রী ছিলেন রাজীব। তবে ফিরহাদ মনে করেন, রাজীব তদন্তের ভয়েই ফিরতে চাইছেন, এমন যুক্তি ঠিক নয়।
আপনি কী দলে রাজীবকে স্বাগত জানাবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমি দলে কাউকে স্বাগত জানানোর কেউ নই। দল দলের সিদ্ধান্ত নেবে। এখনও ওঁর কোনও আবেদনপত্র দলের কাছে আসেনি। যাঁদের আবেদন এসেছে, তাঁদের বিষয়টিও দল ঠিক করবে। কিন্তু দেরিতে বোধোদয় হলেও, ভাল। অনেকে তো এমন রয়েছেন, যাঁদের বোধের উদয়ই হয় না।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার টুইটারে রাজীব লেখেন, ‘সমালোচনা তো অনেক হল... মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভাল ভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস, এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।’ সেই থেকেই রাজীবের ‘ঘর ওয়াপসি’-র জল্পনা শুরু হয়েছে।