ন্যয়বিচার পেতেই আদালতে, জানিয়ে দিলেন ফিরহাদ। — ফাইল ছবি।
তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদন করেছেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তার পরেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, তবে কি ভয় পেয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেতারা? শনিবার ফিরহাদ জানালেন, জেলে যেতে তাঁরা ভয় পান না। সামাজিক সম্মান নিয়ে টানাটানির ভয় পান। তাই ন্যায়বিচার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
শনিবার ফিরহাদ বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত ভাবে হাই কোর্টে গিয়েছি। তার কারণ আমরা বিশ্বাস করি, যদি দেখি বিচারব্যবস্থা আমার সঙ্গে ন্যায়বিচার করছে না, তা হলে আমি তার কাছেই সেটা চাইতে যাব। ন্যায়বিচার পাচ্ছি না মনে হলে আমি আদালতের কাছেই আবেদন করব। না হলে আমি যাবটা কোথায়?’’ এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ সিপিএমের কথাও তুলে আনেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি তো বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব না, যেমন সিপিএম করেছিল ‘লালা বাংলা ছেড়ে পালা’।’’
তিনি এ-ও মনে করিয়ে দিলেন, আইন থেকে কোনও ভাবেই পালানো সম্ভব নয়। আর তৃণমূল তা করবেও না। ফিরহাদের কথায়, ‘‘আপনি কোনও ভাবে বিচারব্যবস্থা থেকে পালিয়ে যেতে পারেন না। যদি আপনার কোথাও মনে হয়, আপনার প্রতি অন্যায় হচ্ছে, আপনাকে বলতে হবে যে, হুজুর এটা আমার পক্ষে অন্যায়, এর মধ্যে অসুবিধা কোথায়? বলতে হবে, যে হুজুর আমার মনে হচ্ছে, এটা ঠিক না। আমি আর এক বার বিষয়টা আপনার নজরে আনতে চাইছি। দেখুন একটু, এর মধ্যে অন্যায় কোথায়?’’
এর পরেই ফিরহাদ জোর গলায় বলেন, ‘‘আমরা তদন্তে ভয় পাচ্ছি না। কিন্তু সবারই সামাজিক সম্মান আছে। সেই সামাজিক সম্মান নিয়ে টানাটানি করলে সবার ভয় লাগে। জেলে থাকতে কোনও ভয় নেই। তার কারণ আমাদের অনেক নেতা জেল খেটেছেন। কিন্তু সামাজিক সম্মান যে ভাবে টেনে এনে রাস্তায় নামানো হচ্ছে, যে ভাবে কিছু সংবাদমাধ্যম, যে ভাবে ‘গদি মিডিয়া’ ক্যাঙারুর কোর্ট বসিয়ে দেয়, সেটাই ভয়। এটা ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এটা আমার কথা নয়।’’
এর পরেই ফিরহাদ মনে করিয়ে দেন, যে অতীতেও অনেক বার পথে নেমে আন্দোলন করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, গুলির সামনে বার বার দাঁড়িয়েছি, নন্দীগ্রামে লড়াই করেছি, সিঙ্গুরে আন্দোলন করেছি, ২১ জুলাই আন্দোলন করেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সব জায়গায়। কেশপুর গিয়েছি, চমকাইতলা গিয়েছি, যেখান থেকে বেঁচে ফিরে আসার কথা ছিল না। কিন্তু তাতেও ভয় পাইনি, কারণ সেখানে সামাজিক সম্মানহানি হওয়ার বিষয় ছিল না। একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। কিন্তু সামাজিক সম্মান যাওয়ার ভয় সবার থাকে। আর সেই সামাজিক সম্মান গেলে আপনার বাড়ির লোক ভুক্তভোগী হয়। সমাজ দায় ভোগ করে।’’