ফিরহাদ হাকিম।
অধুনা তাঁদের দু’জনের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান। কিন্তু কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ‘মিস’ করেন বলে মন্তব্য করলেন বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম (ববি)। শনিবার রাতে অ-জানাকথায় তিনি বললেন, ‘‘শোভন আমার অনেক পুরনো বন্ধু, একসঙ্গে বহু আন্দোলন করেছি। ওকে নিশ্চিত ভাবে ‘মিস’ করি।’’
অ-জানাকথায় প্রাক্তন সতীর্থ সম্পর্কে ববি। বললেন, ‘‘আমি চাই, পুরনো লোকেরা, যাঁরা সেই প্রথম দিন থেকে মমতা দি’র সঙ্গে পথচলা শুরু করেছিলাম, তাঁরা একসঙ্গে থাকব। হঠাৎ করে যে ও চলে যাবে, তা কোনও দিন ভাবিনি।’’ বস্তুত, প্রথমে কংগ্রেস এবং তার পর তৃণমূল— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গীদের অন্যতম ছিলেন ববি ও কানন (মমতা এই নামেই শোভনকে ডাকেন)। কিন্তু বর্তমানে সেই বৃত্তে নেই শোভন। তাঁর এত দিনের সহকর্মী ববি বিচ্ছেদ রোখার চেষ্টাও করেছিলেন। অ-জানাকথায় ববি জানালেন সে কথাও। তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেক বার কথা বলেছি। ফোন করেছি। চেষ্টা করেছি, যাতে ও এই পথে না যায়। কিন্তু মানুষের নিজের সিদ্ধান্ত, সেটা নিয়ে তুমিও কিছু করতে পারবে না, আমিও না।’’
ঘটনাচক্রে, শোভন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু নীলবাড়ির লড়াই শুরুর ঠিক আগে, বিজেপি-ও ত্যাগ করেন। এই দলবদল এবং কিছু ক্ষেত্রে ঘর ওয়াপসিকে কী নজরে দেখেন ববি? তার জবাবও দিয়েছেন কলকাতার বর্তমান মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, যখন জাহাজ ডুবতে থাকে তখন ইঁদুরেরা লাফ দিতে শুরু করে। কিন্তু ইঁদুররা গিয়ে পড়ে সমুদ্রে। সেখানে নিশ্চিত মৃত্যু। আমি মনে করি, দলবদলে খুব বেশি সম্মান থাকে না। একটা দলে থাকলে যে সম্মান, দল থেকে পালিয়ে গেলে সেই সম্মানটা থাকে না। সুতরাং, অন্য দলে গেলেও সম্মান থাকে না। আর সে ফিরে এলেও হৃতসম্মান অর্জন করতে গেলে অনেকটা সময় লেগে যায়।’’
মুকুল রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্তদের পথ ধরে ভবিষ্যতে শুভেন্দুও ফিরে আসবেন? ববির জবাব, ‘‘গেল কেন তা নিয়ে আমার নিজেরও অনেক প্রশ্ন আছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গিয়ে কী পেল? গাঁধীবাদ ছেড়ে গডসেবাদ করা যায় না। এ ভাবে বরং মানুষের কাছে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতাই নষ্ট হয়।’’